খালেদা জিয়ার মুক্তি দেরিতে হতে পারে।। - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, মার্চ ১৪, ২০১৮

খালেদা জিয়ার মুক্তি দেরিতে হতে পারে।।

সময় সংবাদঃ

বহুলাংশ আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই জামিন মঞ্জুর করেন। ৩২ দিন কারাগারে থাকার পর এখন মুক্তির অপেক্ষায় আছেন তিনি। তবে ইতিমধ্যে এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার এ আবেদন করার কথা।

এদিকে কুমিল্লার একটি নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্র্রেফতার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখাতে আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। পরে ওই আবেদন গ্রহণ করে গতকাল বিকেলে এ সংক্রান্ত হাজিরা পরোয়ানা (পিডব্লিউ) জারি করেন কুমিল্লার আমলি আদালত ৫-এর বিচারক মুস্তাহীন বিল্লাহ। আদেশে আগামী ২৮ মার্চ এ মামলায় পরবর্তী শুনানিতে খালেদা জিয়াকে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় আট যাত্রী নিহত হলে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় এ মামলাটি। এর ফলে হাইকোর্ট থেকে জামিন হলেও খালেদা জিয়া আজকালের মধ্যে মুক্তি পাবেন কি-না তা নিশ্চিত নয়।

কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি (ঢাকা বিভাগ) তৌহিদুল ইসলাম সমকালকে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তারা প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের কপি হাতে পেয়েছেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া গত রাতে সমকালকে বলেন, কুমিল্লার আদালত হাজিরা পরোয়ানা (প্রডাকশন ওয়ারেন্ট) জারি করেছেন। তবে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনে মুক্তির বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

আইনজ্ঞরা বলছেন, হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক যদি আপিল করে তাহলে খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হতে পারে আরও। কারণ দুটি বিষয় রয়েছে এখানে- প্রথমত, চেম্বার আদালত দুদকের আবেদন সরাসরি খারিজ করতে পারেন বা নো-অর্ডারও দিতে পারেন। দ্বিতীয়ত, চেম্বার আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চেও পাঠাতে পারেন। যদি দুদকের আবেদন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়, তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আরও কয়েক দিন পেছাতে পারে।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, 'হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করা হবে। এরই মধ্যে আপিলের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, আমরা আপিল ফাইলের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, মঙ্গলবার জামিনের বিরুদ্ধে আপিলে যাব।'

আদেশের পর দুদকের কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে। আজ এ আবেদন করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

জামিনের এই আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আদেশের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনে মুক্তি পেতে বাধা নেই। কেননা তাকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের আদেশ দু'দিনের জন্য স্থগিত চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি আদালত বিবেচনায় নেননি। এখন বিচারপতিরা আদেশে সই করার পর সেটা নিম্ন আদালতে যাবে। নিম্ন আদালতে বেইল বন্ড দাখিলের পর ওই আদালত রিলিজ অর্ডার কারাগারে পাঠাবেন। এর পরই তিনি মুক্তি পাবেন।

এদিকে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিচার বিভাগ যে স্বাধীনভাবে কাজ করছে, খালেদা জিয়ার জামিনই তার প্রমাণ। খালেদার জামিনের আদেশের পর গতকাল তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি নেতারা সারাদেশে বলে বেড়াচ্ছিলেন- সরকার নাকি আদালতে হস্তক্ষেপ করছে, সে কারণেই তার জামিনটা হচ্ছে না। আজকে প্রমাণিত হলো, বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এবং বিচার কাজে সরকার হস্তক্ষেপ করে না। এখন সরকারের পদক্ষেপ কী হবে- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, এটা দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়। এটা সরকারের বিষয় নয়। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত আদেশের কপি জেলগেটে না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে রিলিজ দেওয়া যাবে না।

Post Top Ad

Responsive Ads Here