টাঙ্গাইলে খাদ্য সংকটে বানর লোকালয়ে - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, জুন ২৮, ২০১৮

টাঙ্গাইলে খাদ্য সংকটে বানর লোকালয়ে

জাহাঙ্গীর আলম, টাঙ্গাইল
বিশ্বের তৃতীয় শালবন হিসেবে পরিচিত টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়। এক সময় সব ধরনের বন্য প্রাণীর আশ্রয়স্থল ছিল এই বন। তবে সময়ের বিবর্তনে বনের অনেকাংশই বনদস্যুদের আঘাতে দিন দিন উজার হচ্ছে বন। এতে করে বনের ভিতরে খাবার না পেয়ে লোকালয়ে এসে ভীর করছে বিভিন্ন জায়গায় দেড় থেকে ২’শতাধিক বানর। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় লোকালয়ের বানরগুলো খাবারের অপেক্ষায় থাকে। স্থানীয়দের সামান্য কিছু খাবারে কোন রকমে বেঁচে আছে এরা। খাওয়ার সময় হলে স্থানীয়দের বাড়ীতে গিয়ে হানা দিচ্ছে বানরগুলো। এসব বানরের অবস্থা খুব বেশী ভাল নয়। 


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বানরেরা খাবারের জন্য লোকালয়ে অবস্থান করছে। তাদের দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন সেখানে ভিড় করছেন। সন্তোষপুর এলাকায় অস্থায়ীভাবে ৪ টি দোকানও বসানো হয়েছে। দেখতে আসা অনেকেই সে দোকান থেকে খাবার কিনে বানরদের খাওয়াচ্ছে। স্থানীদের খাবার ও দেখতে আসা লোকেদের খাবারেই কোন রকমে বেঁচে আছে বানরগুলো। নিরাপদ আবাসস্থল বা খাবারের প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন থেকে লোকালয়ে চলে আসে এসব বন্য প্রাণী।

ঘাটাইল উপজেলার গারোবাজার-সানবান্ধা এলাকায় চোখে পড়ে এমন এক দৃশ্য। এ গাছ থেকে ও গাছে চষে বেড়াচ্ছে মধ্যবয়সী কয়েকটি বানর। চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। পিছু নিয়েছে অর্ধশত কিশোর, তরুণ এবং বৃদ্ধবয়সী উৎসুক দর্শক। কিছুতেই স্বস্তির নিঃশাস ফেলতে পারছে না বন থেকে লোকালয়ে চলে আসা এ বানরগুলো। এভাবে  জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বানরগুলো ছুটে চলছে গন্তব্যহীন পথে। অনেকে ধারণা করছেন, পাশর্^বর্তী মধুপুর বন থেকে খাবারের প্রয়োজনে লোকালয়ে চলে এসেছে এসব বানর।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বনের ভিতরে খাবার না পেয়ে বানরগুলো লোকালয়ে এসে বিভিন্ন জায়গায় ভিড় করছে। খাবার কম পাওয়ায় দিন দিন বানরগুলোর স্বাস্থ্যহানী ঘটায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খাবারের জন্য কখনও কখনও তারা আমাদের বাড়ীঘরে হানা দিচ্ছে। ঐ এলাকার মুরগীর দোকানদার জয়নাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বানরগুলো খাবারের অভাবে এখানে অবস্থান করলেও সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আর এ কারণে বানরগুলো দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিল্লাল, আবু হানিফ, আমিরুদ্দিন সহ কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, বানরগুলো খাবারের জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে এ এলাকায় অপেক্ষা করে। খাবারের জন্য অনেক সময় মানুষের ঘাড়ে উঠে বসে পড়ে তারা। খাবার না দেওয়া পর্যন্ত ঘাড় থেকে নামে না বানড়গুলো।

স্থানীয় বিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম খান বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বানরগুলির জন্য মাসে ২ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়ে থাকি। ওই টাকা দিয়ে বানরের খাবার কিনে দেওয়া হয়। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে পশুখাদ্য নামে একটি প্রকল্পের আওতায় এ বিটের পাশেই ৭.৫০ হেক্টর জায়গায় পশুর খাদ্যের বাগান করা হয়েছিল। 

এ ব্যাপারে সাগরদিঘী বনবিট কর্মকর্তা মোঃ আ. আজিজ মিয়া বলেন, সম্ভবত মধুপুর বন এলাকা থেকে এ বানরগুলো চলে এসেছে। তবে এদের প্রতি আমাদের সদয় আচরন করা উচিৎ। আমি আমার সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

Post Top Ad

Responsive Ads Here