জাহাঙ্গীর আলম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে এক প্রাথমিক শিক্ষিকার অনিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের ১৯ টি গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় বেসরকারী স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আনন্দ টিভি’র ও জাতীয় দৈনিক আমার সংবাদের গোপালপুর উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করে হয়রানিপূর্বক গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার উদ্যমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া সুলতানা সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের ১৯টি গাছ কর্তন করে, বিক্রীত অর্থ আত্মসাৎ করে। পরে পত্রিকায় ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা শারমিন স্থানীয় ভুমি অফিসের সহকারী তহশীলদারকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক শিক্ষা অফিসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। শিক্ষা অফিস ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শোকজ করায় তিনি ওই সংবাদিকের ওপর ক্ষুব্ধ হন। পরে তিনি পরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে বাদী করে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে আগের দিন থানায় ডেকে এনে গ্রেপ্তার পূর্বক পরদিন (২১ জুন) থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। গোপালপুর থানার ওসি আল মামুন নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশেষ ব্যক্তির ইচ্ছাপুরণ করতে কোন তদন্ত না করেই সাংবাদিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মত ঘৃন্যতম মামলা দায়ের করে দূর্নীতিবাজদের পক্ষালম্বন করেছেন। সাংবাদিক সোহেল রানা গত ১৩ মে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকায় দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক এর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন তার মামলায় ১৪ মে তার নিকট চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করেছেন। এতে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার বিষয়টি স্পষ্টতই পরিলক্ষিত হয়। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সাথে সাংবাদিকদের বলেন, আপনাদের মত লোকেরাই ঐ মামলা করতে উদ্ধুদ্ধ করেছে।
প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া সুলতানা বলেন, স্কুলের ভিতরে ২টি গাছ ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ায় বাকি গাছগুলো কর্তন করেছি। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সুনির্দিষ্ট রেজুলেশন করা আছে।
এ বিষয়ে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা শারমিন জানান, উদ্যমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের ঘটনা আমি আমার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহসিলদারকে দিয়ে তদন্ত করেছি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরও জানান, সাংবাদিকের নামে অভিযোগ পেয়েই তদন্ত না করে পুলিশের গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি। এভাবে অপরাধীরা আরও আশকারা পেয়ে যাবে।