ডেস্ক নিউজ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় দুই যুবককে হিজড়ারা প্রলোভন দেখিয়ে কথিত অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গসহ অণ্ডকোষ কেটে ফেলেছে।
এতে দিনমজুর ভুক্তভোগী পরিবার দুটিতে হতাশা দেখা দিয়েছে। সন্তানদের এ রকম হওয়ায় দিশাহারা তারা।
অন্যদিকে কর্মক্ষম ও সুস্থ-সবল যুবক প্রলোভনে পড়ে এ রকম হওয়ায় তারা নিজেরাও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় হিজড়া রত্না লোভনীয় জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে এ কাজ করে। এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি- এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক। খবর যমুনা টিভির।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কিসমত আলী বলেন, আমার ছেলে শরিফুল ইসলাম (১৮) ও ঘোপপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে কাজল হোসেন (২০)। আমরা উভয়ই হতদরিদ্র ও দিনমজুর। আমাদের সঙ্গে দুই সন্তানও দিনমজুরের কাজ করত। কালীগঞ্জ শহরের দাসপাড়ার হিজড়া সর্দার রত্না তাদের টাকা ও বাড়ি-গাড়ির প্রলোভন দেখিয়ে গত ঈদুল ফিতরের ১০ দিন আগে বেড়ানোর নাম করে সন্ধ্যায় গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির ১৫ দিন পর তারা বাড়িতে ফিরে আসে। এর পর দেখা যায় তাদের উভয়েরই পুরুষাঙ্গসহ অণ্ডকোষ কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী শরিফুল বলেন, বর্তমানে আমার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিছানায় শুয়েই সময় পার করছি। চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারছে না আমার পরিবার।
শরিফুলের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার একমাত্র ছেলের যে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে রত্না হিজড়া, তার বিচার চাই।
ভুক্তভোগী কাজল বলেন, আমাকে প্রলোভন দেখিয়ে রত্না ও আসমানী হিজড়া বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেত। আমি হিজড়া হলে চাপালীবাজার ও স্থানীয় কয়েক গ্রাম থেকে অর্থ রোজগারের ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। এর পর তারা আমাকে ও শরিফুলকে অচেনা জায়গায় একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সকালে জ্ঞান ফিরলে দেখতে পাই আমাদের গোপনাঙ্গ কেটে বাদ দেয়া হয়েছে এবং নাক ও কান ফোড়ানো হয়েছে।
কাজলের বাবা শামসুল ইসলাম জানান, আমার ছেলের জীবনটা তো নষ্ট হয়েছেই, এখন আমি তার চিকিৎসা খরচ বহন করতে পারছি না। জানি এর কোনো বিচারও পাব না।
ভাই শহীদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়ের মতো আর যেন কারও এমন ক্ষতি না হয়। হিজড়ারা প্রলোভন দেখিয়ে সমাজের যুবকদের যেন এ ধরনের ক্ষতি আর না করতে পারে, সে জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
রত্না হিজড়ার বোনের ছেলে আজিজুল জানান, সে ভারতে গেছে কবে ফিরে আসবে তা কেউ জানে না।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার ঝিনাইদহ জেলা সমন্বয়ক আমিনুর রহমান বলেন, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে। নতুবা এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ডা. জাহিদুর রহমান জানান, এভাবে কোনো পুরুষকে নারীতে পরিণত করা যায় না। এতে রক্তক্ষরণে মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।