৪৮ ঘন্টায় ও খোঁজ মেলেনি বড়াইগ্রামে নিখোঁজ কলেজ শিক্ষকের ; সংবাদ সম্মেলন - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জুলাই ০৬, ২০১৮

৪৮ ঘন্টায় ও খোঁজ মেলেনি বড়াইগ্রামে নিখোঁজ কলেজ শিক্ষকের ; সংবাদ সম্মেলন

আবু মুসা,বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি  
নাটোরে বড়াইগ্রামের বনপাড়া ডিগ্রি কলেজের আরবী বিষয়ের সিনিয়র প্রভাষক নিখোঁজ মাসুদ রেজাকে অবিলম্বে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় সন্ধান ও ফিরে পেতে  প্রশাসন, সাংবাদিক সহ সকল শ্রেণির মানুষের কাছে সহযোগিতার দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজটির শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ। বৃহষ্পতিবার বেলা তিনটায় কলেজ চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সকলের সহযোগিতা দাবী করে বক্তব্য রাখেন বনপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার দাস ও প্রভাষক সুধীর কুমার রুদ্র। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
বনপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পরিমল কুমার দাস বলেন, মাসুদ রেজা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা থেকে ছোট ছেলেকে নিয়ে কলেজে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরে কলেজ গেটের দিকে যান। ধারনা করেছিলাম জোহরের নামাজের জন্য যাচ্ছেন । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
মাসুদ রেজা চাপাইনবাঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার রহনপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। ২০০৩ সালে তিনি আরবি বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে বনপাড়া কলেজে যোগদান করেন।
বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে আমি কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষসহ উপস্থিত অনেক শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি। কেন তিনি নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারেন, এমন সম্ভাভ্য কারন বের করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া তার সন্ধান পেতে সব ধরনের চেষ্টা শুরু হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার দাস বলেন, শিক্ষক মাসুদ রেজাকে উদ্ধারের জন্য মোবাইল ট্রাকিংসহ সবধরনে অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করি দ্রুতই তার সন্ধান পাব। 
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কলেজের আরবী বিষয়ে সিনিয়র প্রভাষক মাসুদ রেজাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বুধবার দুপুর ১টার দিকে তিনি কলেজ অফিস থেকে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরে যান নাই। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোনটি (০১৭৩৯২৭৮৮৪৮) বন্ধ রয়েছে। বিকেলে বাসায় না ফেরায় তার স্ত্রী আলমোবাশ্বেরা ও দুই ছেলে কলেজে মাসুদ রেজাকে খোঁজ করতে এলে বিষয়টি সরাব নজরে আসে। এ বিষয়ে মাসুদ রেজার স্ত্রী বড়াইগ্রাম থানায় বুধবার সন্ধায় একটি সাধারণ ডায়রী (নম্বর-১৪৫) করেছেন। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুরাম দাস জিডির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই শিক্ষককে উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকলে ৪টা পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলেজের পিওন আলাউদ্দিনকে (৫৪) আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শিক্ষক মাসুদ রেজার সন্ধানের দাবী জানিয়েছে বনপাড়া কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী এবং তার পরিবারের সদস্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তারা।
মাসুদ রেজার স্ত্রী মোবাশ্বেরা বলেন, বুধবার সকাল ১০টার দিকে মাসুদ ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে কলেজে গেছেন। বাসায় ফিরে তার দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা। দুপুরে বাসায় না যাওয়ায় তাকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভেবেছিলাম নামাজে গিয়ে হয়তো ফোন বন্ধ করেছে। বাসায় এলে বিষয়টি মনে করিয়ে দেবেন। কিন্তু এরপরই দুপুর দুইটার দিকে ছোট ছেলে বাসায় গিয়ে জানায় আব্বুকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ থাকায় কলেজের কোন স্যারও তাকে পাচ্ছেন না। এখবর শুনে তিনি বড় ছেলে আব্দুল্লাহ (১৩) ও ছোট ছেলে আব্দুর রহমানকে  সাথে নিয়ে কলেজে আসেন। কোন খোঁজ না পেয়ে থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়রী করেছি। পরে রাতে র‌্যাব-৫ এর নাটোর ক্যাম্পে গিয়েও অভিযোগ করেছি। তিনি আরো বলেন, জানামতে মাসুদের সাথে কারো বিরোধ নাই। কেন তাকে পাওয়া যাচ্ছে না কোনভাবেই বুঝে উঠতে পারছি না। 
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুন-অর রশিদ জানান, শিক্ষক মাসুদ রেজাকে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। তার ব্যক্তিগত তথ্য এবং সম্ভাব্য সকল বিষয়ে এবং ব্যবহ্রত কম্পিউটার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মাসদু রেজার ফোনে সর্বশেষ বুধবার দুপুর ১২.৪০ মিনিট ২৬ সেকেন্টে পিওন আলাউদ্দিন ফোন করে ২৫ সেকেন্ড কথা বলেছেন। কলেজের প্রদর্শক মহাদেব এর বর্ণনা মতে মাসুদ রেজা ঠিক ওই সময় একটি ফোন পেয়ে বাহিরে যান। এরপর আর ফিরে আসেন নাই। এছাড়া কোন কোন শিক্ষক অস্পষ্ট ভাবে জানান, মাসুদ রেজাকে একটি মোটরসাইকেলে উঠে কলেজ থেকে বের হতে দেখেছেন, তার কার মোটরসাইকেল তা জানা যাচ্ছে না।

Post Top Ad

Responsive Ads Here