মির্জাপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ ।SHOMOY SANGBAD - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, জুলাই ০৩, ২০১৮

মির্জাপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ ।SHOMOY SANGBAD

মোঃ মাজহারুল ইসলাম শিপলু, মির্জাপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় বিদ্যুতের সংযোগ নিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী শতভাগ বিদ্যুৎসংযোগের আওতায় আনার কাজ  চলছে সারা দেশে। কিন্তু সবকিছু ঠিক থাকার পরও মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংযোগপ্রত্যাশী গ্রাহকপ্রতি ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় সব জায়গায়ই সক্রিয় আছে অসংখ্য দালাল। ঠিকাদার ও স্থানীয় দালালদের যোগসাজসে তৈরি হওয়া এই দালাল চক্র দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গ্রাহক ভেদে আদায় করছে নূন্যতম ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এমনি একজন দালালের খোঁজ মিলেছে উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের আগ ধল্যা গ্রামে। তার নাম রশীদ সোবেদার। বিদ্যুৎ সংযোগের দালালী করাই তার পেশা। ঐ গ্রামের আজিজুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ সালে ৯ মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি সহ রফিক, বিরেন চন্দ্র দাস, লক্ষণ, সুমন, হানিফ আলী, আবুল, ফারুক, হাফেজ ও সেলিম মোট ১০ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করেন ঐ দালাল। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে প্রত্যেকের কাছ থেকে আদায় করেন ১৫-২০ হাজার টাকা। এছাড়াও একই গ্রামের ইব্রাহীম ও তোফাজ্জল হোসেনের কাছ থেকে নিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু ৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো দেখা মেলেনি কাঙ্খিত বিদ্যুৎ সংযোগের। এখন আবার নতুন করে টাকা দাবী করছে সেই দালাল। হুমকী দিচ্ছে টাকা না দিলে খুঁটি উঠিয়ে নিয়ে যাবে। একদিকে এত দীর্ঘ সময় পরও মিলেনি বিদ্যুৎ সেবা তার উপর আবার নতুন করে টাকার দাবী। এতে অতিষ্ঠ ও অসহায় হয়ে পরেছেন সংযোগপ্রত্যাশী দরিদ্র স্বল্প শিক্ষিত সাধারণ মানুষরা। অথচ অভিযুক্ত রশীদ সোবেদারের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অত্যন্ত ধূর্ত এই দালাল বেমালুল অস্বীকার করে বসেন তার বিরুদ্ধে আনীত সমস্ত অভিযোগ। সাংবাদিকের কাছে প্রমান আছে বললে ফোনটি বন্ধ করে ফেলেন এই দালাল।
একই ইউনিয়নে খোঁজ মিলেছে মীর আবুল বাশার নামে আরেক দালালের। তার বাড়ি জামুর্কী ইউনিয়নের বানিয়ারা গ্রামে। অভিযোগ আছে স্বল্প সময়ে বিদ্যুৎ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে জুয়েল, সানো গাজী, খালেক ও সোহেলের কাছ থেকে তিনি নিয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। ৩ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারাও। ভোক্তভোগী জুয়েল মিয়া জানান, টাকা তুলার দায়িত্ব নিয়ে বিপাকের মধ্যে পড়েছেন তিনি, সবাই তার উপর চাপ সৃষ্টি করছে। এদিকে আর টাকা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবেনা ও খুটি উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকীও দিচ্ছে ঐ দালাল। এ ব্যাপারে দালাল আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হলে টাকা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন তিনি। তবে দেড় লাখ নয় চল্লিশ হাজার টাকা। দাবি করেন সেই টাকার পুরোটাই নাকি তিনি দিয়ে দিয়েছেন আব্দুল গফুর নামক এক ঠিকাদারকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরকম শত শত রশীদ, আবুলরা তৈরি হয়েছে উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে। দ্রুত বিদ্যুৎ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তারা সহজ সরল স্বল্প শিক্ষিত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। একটি মিটার ফি যেখানে ৪শ টাকা ও সদস্য ফি ৫০ টাকা সেখানে দালালচক্র সহজ সরল মানুষদের  কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে নূন্যতম ৫ হাজার টাকা। অভিযোগ আছে পল্লী বিদ্যুতের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, পরিচালক, ঠিকাদার ও স্থানীয় দালালদের সমন্বয়েই এই অর্থ বাণিজ্য হয়ে আসছে।
এ ব্যাপার টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুতের প্রকৌশলী ধীরজ মোহন সরকারের সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মির্জাপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়, স্থানীয় দালাল চক্র বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা বলে সংযোগপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন এমন অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলায় সংযোগ নিতে টাকা না দিতে মাইকিং করা হয়েছে। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাইকিং করা হলেও অভিযোগ থেমে নেই এ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, শুধু জামানত হিসাবে ৪৫০ টাকা জমা দিয়েই বর্তমানে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখা হবে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here