চরভদ্রাসন প্রতিনিধিঃফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের আব্দুল শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের ‘জামিয়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলুম’ কওমি মাদ্রাসাপ্রধান (মুহতামিম) ও সদর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আবদুস সবুরকে গভীর ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগে ফাসানোর ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গত (৬অক্টোবর) শনিবার দৈনিক যুগান্তর ও স্থানীয় ভোরের প্রত্যাশা সহ বেশ কিছু অনলাইন পত্রিকায় মাদ্রাসা প্রধানকে জড়িয়ে ২৮ জন হাজীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৭০ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও হাজিদেরকে যথাস্থানে অবস্থান না করানোসহ মাদ্রাসার নামে ভুয়া রশিদ বই ছাপিয়ে লাখ লাখ টাকা আতœসাৎ করাসহ বিভিন্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট মনগোড়া সংবাদ প্রকাশ করে তাকে সামাজিক, আর্থিক এবং মানুষিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে ।
হাজীদের কাছ থেকে বেশী টাকা নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য গত ৭ (অক্টোবর) বাদ মাগরিব চরভদ্রাসন বাজার বনিক সমিতির কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাবৃন্দ,গন্যমান্য ব্যাক্তি ও সকল হাজিদের নিয়ে এক আলোচনা সভা করা হয়।উক্ত সভায় আনিত অভিযোগকারীরা কেউ অভিযোগের সত্যতা প্রমান করতে পারেনি।এবং সকল হাজীগন মুফতি আব্দুস সবুর কে আল্লাহভীরু ও নেক ইনসান হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।পরবর্তীতে আব্দুল শিকদার ডাংগি মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে প্রায় দুই শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মুফতি সাহেবের দুর্নীতির কথা তুলে ধরলে সেখানেও অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়।
তারই পরীপেক্ষিতে গত ১২ অক্টোবর ‘দৈনিক ভোরের প্রত্যাশা’ পত্রিকায় “প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা” শিরোনাম দিয়ে একটি সংশোধন মূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
এদিকে কুচক্রীমহল থেমে থাকেনি।এই কুচক্রী মহলের গোপন বৈঠকের প্রায় ৩০ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড গত ১৪ অক্টোবর প্রকাশ হয়।সেখানে মুফতি হুজুরকে ষড়যন্তমূলক ভাবে ফাসানো ও তাকে জামাতে ইসলাম প্রমানিত করে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার বিভিন্ন নীল নকশা প্রকাশ পায়।এতে স্থানীয় ধর্মপ্রান লোকজন ক্ষদ্ধ হয় এবং এর তীব্র নিন্দা জানায়।তারা এর সুষ্ঠ বিচারের দাবি করে।
এবিষয়ে মাদ্রাসা প্রধান ও বাজার জামে মসজিদের মুফতি মাওলানা আবদুস সবুর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বাজার মসজিদের ইমামতি সহ পাশ্ববর্তি আব্দুল শিকদার ডাঙ্গী মাদ্রাসা প্রধান হিসেবে বেশ সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে করছি। এবছর সরকারি ভাবে প্রত্যেকজন হাজীর সরকারি ব্যায় নির্ধারন করা হয়েছে ৩লক্ষ ৩১ হাজার টাকা করে। আর আমি সেখানে প্রত্যেক হাজীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে ২৮ জন হাজীর কাছ থেকে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে কম নিয়ে মোট ৫লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা কম নিয়েছি।
তিনি বলেন বেশ কিছুদিন ধরে আব্দুল শিকদার ডাঙ্গী মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সেক্রেটারি ও স্থানীয় আরো কিছু কচুক্রিমহল আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন, হয়রানি ও তাদের অসৎ উর্দ্দেশ্য হাসিল করার জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা প্রচার এবং গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।আমার সাথে হজ্ব করতে গেলে হাজীদের কম টাকা লাগে তাই তারা ব্যাবসা করতে পারেনা এবং আমি থাকা অবস্থায় মাদ্রাসার অর্থ লুটপাট করতে পারেনা।এজন্যই আমাকে সড়ানোর জন্য তারা এই জঘন্য পরিকল্পনা করেছে।
এবছর হজ্ব করতে যাওয়া হাজী মাইনউদ্দিন মোল্যা, আবুল মুন্সি ও মোশারফ হোসেন শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন হাজী জানান, আমরা এবছর মুফতি আবদুস সবুরের মাধ্যমে হজ্বে যেতে পেরে ভিষন খুশি ও সন্তুষ্ট। কেননা, ওনার সাথে হজ্বে গিয়ে আমরা হজ্বের ওয়াজিব আহকাম ও প্রথ্যেকটি স্থান ঘুরে ঘুরে হজ্ব পরিপূর্ন ভাবে আদায় করতে পেরেছি। তারা আরো বলেন, তিনি সবসময় আমাদের খাওয়া,ভ্রমন ও বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার খোজ খবর নিয়েছেন। কারো কোন সমস্যা হলে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে নিজে সাথে থেকে তা সমাধান করেছেন ।
বাজার জামে মসজিদের সহ-সভাপতি ও আ’লীগ নেতা আনোয়ার আলী মোল্যা বলেন, একটি কুচক্রী মহল মুফতি আবদুস সবুরের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে উঠেপড়ে লেগেছে।সে একজন অভিজ্ঞ আলেম এবং জামাতের ঘোর বিরোধী।তার প্রচেষ্টায় কম খরচে হজ্ব করা ও মাদ্রাসার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।তার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্তের তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মোঃ শহিদ মোল্যা জানান, আমাদের মুফতি হুজুর একজন অত্যান্ত ভালো মনের মানুষ। কিছু কুচক্রিমহলের লোকজনেরা প্রথম থেকেই মুফতি হুজরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে তাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। শুধু তাই নয় তাকে আব্দুল শিকদার ডাঙ্গী মাদ্রাসা ও বাজার জামে মসজিদের ইমাম থেকে সড়িয়ে দিতে তার রুমে নেংটা পোলাপান দিয়ে জিহাদি বই ফেলে রেখে তাকে জেএমবি প্রতারক ও মাদ্রাসার অর্থ অতœসাৎকারী বানানোর অপচেষ্টায় একটি কচুক্রিমহল তার বিরুদ্ধে এখনও গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে তিনি জানান।
বাজার জামে মসজিদের সেক্রেটারী আব্দুল হালিম মৃধা জানান, আমার দীর্ঘদিনের দেখা দৃষ্টিতে মুফতি হুজুর একজন সৎ ও ভালো মনের মানুষ। আমার জানামতে সে হাজীদের সাথে খারাপ কোন আচরন করে নাই। এমনকি তার বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ভুয়া রশিদ দিয়ে লাখ লাখ টাকা আতœসাৎ করার বিভিন্ন পত্রিকার খবরটিও মিথ্যা। সে আরো বলেন, আমার মনে হচ্ছে কিছু কচুক্রিমহল মুফতি হুজুরকে হয়রানি ও তাদের অসৎ উর্দ্দেশ্য হাসিল করার জন্যই এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন।