এম সাইফুর রহমান, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সৌর বিদ্যুতের আলো বদলে দিচ্ছে চরাঞ্চলবাসীর জীবনমান। সরকারের প্রতিশ্রুতি ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার ধারবাহিকতায় প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে সৌর বিদ্যুত প্রকল্পের মাধ্যমে পাচ্ছে এর সুফল। এতে করে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার চরাঞ্চলবাসী আর্থিক লাভের পাশাপাশি পড়াশুনায় এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরাও।
দেশের বৃহত্তম নদ-নদী মাতৃক জেলা কুড়িগ্রাম। এখানে ১৬টি নদ-নদীতে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর। এতে বসবাস করে প্রায় ৫ লাখ মানুষ। মূল ভ‚খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই জনপদের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ ছিল এক স্বপ্নের নাম। এখানে সূর্য অস্ত যাবার সাথে সাথে চারদিকে নেমে আসে নিস্তব্ধ নিরবতা। নিকশ কালো আঁধারে ছেঁয়ে যেত গোটা চরাঞ্চল। যুগের পর যুগ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব মানুষের জীবনে নেই কোন লোডশেডিংয়ের ঝামেলা। রাতের কাজকর্ম সারতে হতো কুপি বা হেরিকেনের আলোয়। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁেছ দেয়ার লক্ষ্যে সোলার প্রকল্প পাল্টে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা। সোলারের আলোয় আলোকিত হয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। ঘরকে আলোকিত করার পাশাপাশি মোবাইল, কম্পিউটার, টেলিভিশন, ফ্যান, রেফ্রিজেটরসহ ইলেকট্রিক সামগ্রি ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে তারা। রাত জেগে নিজেদের পড়াশুনার মান এগিয়ে নিচ্ছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে পিছিয়ে পরা এ জনপদের মানুষ। বিনাম‚ল্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ২০ ওয়াট হতে ১২০০ ওয়াট পর্যন্ত বিতরন করা হচ্ছে। নাগেশ^রী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ব্যাপারী জানান, বিনামূল্যে সৌর বিদ্যুতের আলো আসার কারণে অভাবী চরাঞ্চলবাসীর জীবনমানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। নাগেশ্বরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা জানান, নাগেশ্বরী উপজেলার চরাঞ্চল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিগত ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে টিআর ও কাবিটা প্রকল্পের অধীনে ১ হাজার ৬৭৭টি সোলার প্যানেলের জন্য ২ কোটি ৯৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৯৭ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শঙ্কর কুমার বিশ্বাস জানান, চরাঞ্চলে বৈদ্যুতিক খুঁটি দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের সুযোগ না থাকায় সোলার প্যানেল এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বর্তমান সরকার চরবাসীদের এসব সমস্যার কথা বিবেচনা করে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদেরকে আলো সরবরাহের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।