নদীর ভাঙ্গনের কবলে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার ফুফুর প্রায় ৩শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

বুধবার, অক্টোবর ১৭, ২০১৮

নদীর ভাঙ্গনের কবলে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী কিবরিয়ার ফুফুর প্রায় ৩শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি

আজিজুল ইসলাম সজীব,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি-হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে কুশিয়ারা নদী যেন এক মূর্তিমান আতঙ্ক। সর্বনাশা এই নদী কেড়ে নিচ্ছে ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি। কুশিয়ারার এই ভাঙন চলছে যুগের পর যুগ ধরে। সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছে শত শত পরিবার। যাদের অনেক কিছুই ছিল তারা আজ চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

প্রতি বছরই এ নদী ভাঙনের ফলে গৃহহীনের সংখ্যা বাড়ছে নদী ভাঙন থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় তেমন কোনো কর্তৃপক্ষের তেমন কোন উদ্যোগই নেই বললেই চলে তবে  ভাঙনের কবলে পড়েছে ওই এলাকার ঐতিহ্যবাহী একটি বাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে কুশিয়ারার করাল গ্রাস অপর দিকে ভাঙন। 
গত কয়েকদিন ধরে ভাঙনের কবলে পড়েছে প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া উনার  ফুফুর বাড়ি। দীঘলবাক গ্রামের প্রবাসী আবুল হাসেম ছুপির প্রায় ৩শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ওই বাড়িতে অনেক মন্ত্রী এমপিসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে অনেক সৃর্তির মধুর সময় কাটানোর মূহুর্তের কথা শুনতে পাওয়া যায়। 
নদী ভাঙন যেন গরীব ও ধনীকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে। আপদে-বিপদে ধনীরা গরীবদের সাহায্য করে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কে কার সাহায্য করবে।
কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে দীঘলবাক এলাকার বসতবাড়ি, বনজসম্পদ, চাষাবাদযোগ্য ভূমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার উপাসনালয় ইত্যাদি বিলীন হয়ে গেছে। তারপরও কুশিয়ারা নদীর ধ্বংসলীলা রোধকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নদী সভ্যতার প্রতীক হলেও কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী এলাকা এলাকাবাসীর জন্য ধ্বংস ও ভয়ানক প্রতীকরূপে বিরাজমান।
তীরবর্তী এলাকাগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর নাব্যতা হ্রাস, ঘরবাড়ি, বনজসম্পদ, চাষাবাদযোগ্য ভূমি ও বসতবাড়ি ভাঙন সমস্যা, বন্যার তাণ্ডবলীলায় ফসলহানি, নদীতে চর জাগা, নৌযান চলাচল বিপর্যস্ত, মৎস্য সম্পদের অভাব, কুশিয়ারার তীর সংরক্ষণে উদাসীনতা ও স্থানীয় জীবনযাত্রার নিম্নমান সেই ব্রিটিশ শাসন থেকে অব্যাহত আছে।
কুশিয়ারা নদীর হিংস্র থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত ও গৃহহীন হয়েছেন উত্তর নবীগঞ্জের দীঘলবাক, আহমদপুর, কুমারকাদা, গালিমপুর, মাধবপুর, ফাদুল্লা, মথুরাপুর, জগন্নাথপুর উপজেলার আটঘর, নোয়াগাঁও, রানীগঞ্জ, বানিয়াচং উপজেলার এক বিরাট জনগোষ্ঠী।
কুশিয়ারা নদীর ভয়াবহ ভাঙন থেকে ঐতিহ্যবাহী দীঘলবাক এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে সরকারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করে ইতিপূর্বে সমাজকর্মী, লেখক শিক্ষানুরাগী ও সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ ছোটন এর নেতৃত্বে বিশাল মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে দীঘলবাকবাসী।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে বারবার আবেদন করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। অচিরেই নদী ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা না নিলে ঐতিহ্যবাহী দীঘলবাক গ্রাম তথা ইউনিয়ন এক সময় বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকায় আছে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসান বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।
এলাকাবাসী করাল কুশিয়ারা নদীর ভাঙন থেকে মুক্তি চান। তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।