নাগরিকত্ব দিলে ফিরতে পারি’ চীনের প্রতিনিধি দলকে রোহিঙ্গারা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯

নাগরিকত্ব দিলে ফিরতে পারি’ চীনের প্রতিনিধি দলকে রোহিঙ্গারা

news desk-//
নাগরিকত্ব দিলে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন বলে চীনের প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।রোববার দুপুরে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া নো-ম্যানস ল্যান্ডে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশে পরিদর্শনে আসা চীনের প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের নেতৃত্ব প্রতিনিধি দলটি শূন্য রেখায় পৌঁছে সেখানকার রোহিঙ্গা শিশু, নারী-পুরুষদের সঙ্গে কথা বলেন।মিয়ানমারে ফিরতে রাজি হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে সেখানকার রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। এর আগেও তারা অনেকবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। তাই সরাসরি নাগরিকত্ব ও সহায় সম্বল ফেরত দিলেই আমরা ফিরতে পারি।তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকারের প্রতি অবিশ্বাস ও অনাস্থা রোহিঙ্গাদের মধ্যে গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে নিজ জন্মভূমি রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে বাস করতে বাধ্য করা হয়েছে রোহিঙ্গা জনগণকে।

‘আরসা’ বা অন্য এনজিও সংস্থার লোকজন তাদের মিয়ানমারে ফিরতে বাধা দিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে দিল মোহাম্মদ বলেন, প্রত্যাবাসনে বাধা সৃষ্টি করতে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মিয়ানমারে ফেরত যেতে কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে এখন চলে যেতে প্রস্তুত সবাই।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, বান্দরবানের তুমব্রু খালের কাছে শূন্য রেখায় প্রায় এক হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার রয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের অন্য ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাগরিক সুবিধা থাকলেও এখানে কিছুই নেই। রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেড়শ'র মতো এনজিও কাজ করলেও এদিকে কারও নজর নেই। তবে জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) আওতায় ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) প্রতি মাসে দু'বার করে নো-ম্যানস ল্যান্ডে ত্রাণ দিচ্ছে।বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, পরির্দশনে আসা চীনের একটি প্রতিনিধি দল নো-ম্যানস ল্যান্ডে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় রোহিঙ্গারা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় প্রতিনিধি দলটি।বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের নেতৃত্ব প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে রোহিঙ্গা ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে।
 পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে। ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো একজনও রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়নি।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
এরপর চলতি বছরের ২২ আগস্ট বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে তিন হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সেদিনও শেষ মুহূর্তে রোহিঙ্গারা আবারও প্রত্যাবাসনের নানা শর্ত জুড়ে দেওয়ায় প্রত্যাবাসন হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

Post Top Ad

Responsive Ads Here