জাহাঙ্গীর আলম, টাঙ্গাইল-
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়ায় সামিউল ইসলাম নামে এক মানবাধিকার কর্মীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সামিউল করটিয়া কলেজ পাড়ার মজিবর রহমানের ছেলে ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জেলা শাখার সদস্য।
জানাগেছে, মানবাধিকার কর্মী মো. সামিউল ইসলাম(৪০) ব্যবসায়িক লেনদেন পরিশোধ করার জন্য মঙ্গলবার(১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে করটিয়া বাজারস্থ মজিবর রহমান মার্কেটের নিচ তলায় পৌঁছলে স্থানীয় হাজী সালামের ছেলে দেলখুশ(৫০), মৃত ডা. মোকছেদের ছেলে হেলাল(৫০), মৃত গোলাম রহমত বাচ্চুর ছেলে হাবিব(৪৫) ও তার ভাই করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান(৩০), দেলোয়ার হোসেনের ছেলে করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজ শাখা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি রানা(৩৫) এবং আফজাল তালুকদারের ছেলে সিহাব তালুকদার(২৫) অতর্কিত হামলা করে। তারা সামিউলকে বেধড়ক মারপিট করে এবং সাথে থাকা তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা মজিবর রহমান মার্কেটের নিচ তলার একটি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় মো. সামিউল বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
সরেজমিনে হামলার শিকার মো. সামিউল জানান, তার চাচা মামুন আনছারী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর তার সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষে তার অপর চাচা ও চাচাত ভাইয়েরা নানা ফন্দি-ফিকির করছে। তিনি চাচা মামুন আনছারীর স্ত্রী নাছিমা বেওয়ার সম্পত্তির অংশ রক্ষা করার চেষ্টায় চাচীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ বিষয় নিয়েই মূলত তাদের সাথে মূল বিরোধ। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী দলীয় ও প্রশাসনিক ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আত্মসাতকারীদের পক্ষাবলম্বন করেছেন।
তিনি জানান, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান ও সাবেক সভাপতি রানাকে নিয়ে একটি বাহাম তৈরি করেছেন। ওই বাহামের মাধ্যমে এলাকায় নিরবে চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্ম চালানো হচ্ছে। স্থানীয় বিভিন্ন সালিশ-বিচারে অর্থের বিনিময়ে তারাই মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। তিনি থানায় অভিযোগ দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিষয়টি পারিবারিক এবং তিনি সমঝোতা করবেন বলে প্রতিশ্রæতি দিয়ে এফআইআর করতে বিলম্ব করাচ্ছেন।
করটিয়া বাজার সমিতির সভাপতি অসুস্থ নজরুল ইসলামের ছেলে সেকান্দার আলী জানান, গাড়ি ঘোরানোর সময় বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে ধাক্কা লাগার কারণে সামিউল গালিগালাজ করেন। এ সময় প্রতিবাদ করতে গেলে হাসান, রানা, দেলখুশদের সাথে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে সামিউল সামান্য আহত হন।
করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রানা জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একটি খুঁটি বসানোকে কেন্দ্র করে সামিউলের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। এটা পারিবারিক বিষয় মুরব্বীরা মিমাংসা করে দেবেন।
টাঙ্গাইল জেলা আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী জানান, বিষয়টি তাদের পারিবারিক। তিনি ঘরোয়াভাবে বসে মিমাংসা করবেন।
টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।