গ্রাম্য শালিসে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৯

গ্রাম্য শালিসে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা

জাহাঙ্গীর আলম, টাঙ্গাইল-
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের আটিয়া ইউনিয়নের আটিয়া গ্রামে ৭ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতাব্বররা ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার শিশুটির প্রত্যক্ষদর্শী চাচীর স্বীকারোক্তিতে জানায়, গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আমার সাংসারিক কাজে গম মাপার জন্য পাশর্^বর্তী বাড়ি মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলের সলিম বিল্লাহ (৫৫) বাড়িতে দাড়িপাল্লা আনার জন্য যাই। তখন তিনি (সলিম বিল্লাহ) বলেন, আমার বউ বাসায় নাই, রাতে খাব কি? পরে আমি আমার ভাতিজি ও মেয়েকে ঐ বাড়িতে রেখে তার রাতের খাবার ভাতের জন্য আমার বাড়িতে আসি। কিছুক্ষণ পর ভাত নিয়ে গিয়ে দেখি আমার ভাতিজির (৭) পরনের কাপড় খুলে সলিম বিল্লাহ তার পুরুষাঙ্গ দিয়ে গোপনাঙ্গে ঘষাঘষি করতেছে। সেসময় আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি ও প্রতিবাদ করে বলি, আপনি এটা কি করতেছেন? এটা কি আপনাকে মানায়?  তখন সলিম বিল্লাহ আমার পা জড়িয়ে ধরে মাপ চাইতে শুরু করে। আর বলতে থাকে, মা আমার ভুল হয়ে গেছে। আর কোনদিন এই ভুল হবে না। আমাকে তুমি বাঁচাও। তখন আমি চিৎকার-চেঁচামেচি করলে এলাকার কয়েকজন লোক এসে তাকে আমার পা ধরা অবস্থায় দেখে। পরে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে সলিম বিল্লাহকে মারধর করে।

এসময় তিনি জানান, সলিম বিল্লাহ আমার ভাতিজি ও মেয়েকে প্রথমে ভয় দেখায় ও পরে টাকার লোভ দেখায়। তিনি আরো জানান, এর আগেও আমার মেয়ে ও ভাতিজি আমার কাছে তার (সলিম বিল্লাহ) এই ধরনের অপকর্মের কথা আমাকে বলেছে, কিন্তু আমি বিশ^াস করিনি। কারণ তিনি বয়স্ক পিতৃতুল্য লোক, আমরা সবাই তাকে খুব সম্মান করি। আজও বিশ^াস করতাম না, যদি না আমি নিজ চোখে এই ঘটনা দেখতাম।

স্থানীয় মজনু মিয়া ও ঝর্ণা বেগম জানান, এ ঘটনায় ওই দিন রাতে অভিযুক্তের বাড়িতে আটিয়া ইউপি সদস্য জয়নাল উদ্দিন, সাবেক চন্দন চেয়ারম্যানের ভাই কামাল, শাজাহান আলী, স্থানীয় মাতাব্বর মুকুল মাস্টারের বাহামভূক্ত লোকজন ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্ত সলিম বিল্লাহকে ১০টি জুতার বারি দিয়ে গ্রাম্য ভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়। যা আইন বিরোধী।

চায়ের দোকানে বসে থাকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, এত বড় একটি ঘটনা এরা কাউকে না জানিয়ে অভিযুক্তের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে গোপনে ঘরোয়া শালিস করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা করছে।

ঘটনার শালিস পরিচালনাকারী ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নাল উদ্দিন বলেন, আমরা শালিস করে অভিযুক্তকে ১০টি জুতার বারি দিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজ হোসেন মল্লিক বলেন, আমি ঘটনা জানতাম না, আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যত দ্রæত সম্ভব প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পদক্ষেপ নেব।

এ ব্যাপারে দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম সাইদুল হক ভুঁইয়া বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নাই এবং থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Post Top Ad

Responsive Ads Here