সময় সংবাদ ডেস্ক//
পুলিশের সহায়তায় কৃষকের বাড়ি ভাঙ্গতে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে অবরুদ্ধ হন লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার সহকারী উপ পরিদর্শক(এএসআই) নবীন চন্দ্র। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মনসের আলী বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় এইট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের রইসবাগ রেল গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রইসবাগ এলাকার মৃত ওসমান আলীর ছেলে মনসের আলীর বসত ভিটার ১০ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ তার প্রতিবেশী মৃত পনির উদ্দিনের ছেলে এরশাদ আলীর। এ জমি নিয়ে উভয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়ে থানায় ও আদালতে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে সেই জমিতে থাকা মনসের আলীর বসত ঘর মেরামত কাজ শুরু করেন। এ সময় তার দায়ের করা একটি মামলায় তদন্তে ঘটনাস্থলে আসেন আদিতমারী থানার উপ পরিদর্শক(এসআই) রঞ্জু তদন্ত শেষে তিনি চলে গেলে প্রতিপক্ষ এরশাদের ধারনা পুলিশ ঘর তোলার অনুমতি দিয়েছে।
এ ধারনা থেকে ঘরের কাজ বন্ধের জন্য নিজের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদিতমারী থানার সহকারী উপ পরিদর্শক(এএসআই) নবীন চন্দ্রকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেন এরশাদ আলী। বাদির ফোনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এএসআই নবীন চন্দ্র। এ সময় বাড়ির মালিক মনসের আলীকে এএসআই নবীন চন্দ্র আটক করে ধরে রাখলে অপর পক্ষ এরশাদ আলী ও তার লোকজন ঘরটি ভাঙচুর করে। বাঁধা দিতে গিয়ে ঘরের মালিক মনসের আলীর স্ত্রী আকলিমা বেগম আহত হন। এ সময় উপস্থিত গ্রামবাসী পুলিশের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে এএসআই নবীন চন্দ্রকে আধঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে আহত আকলিমাকে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে এএসআই নবীন চন্দ্রকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে থানা পুলিশ ওই জমি ও ঘরের উপর ১৪৪ ধারা জারি করে সকলে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষনা করে নোটিশ জারি করে।
কৃষক মনসের আলী বলেন, এএসআই এসেই অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ঘর সড়ানোর নির্দেশ দেন। জমির দলিল দেখালে তা ছিড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। ঘর না সড়ালে জেলে পঁচানোর হুমকী দেন নবীন। এ সময় নবীন আমাকে আটকে ধরলে এরশাদ লোকজন নিয়ে ঘরটি ভাঙচুর চলে যায়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোক হয়ে বে আইনি ভাবে ঘর ভাংচুরের সহায়তা করার জন্য এএসআই নবীনের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে এরশাদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, প্রতিপক্ষের পুলিশ কর্মকর্তা এসআই রঞ্জু এসে ঘরে বেড়া দিতে নির্দেশ দিলে আমরাও আমাদের কর্মকর্তা এএসআই নবীনকে ডেকে নিয়ে আমাদের জমি উদ্ধার করেছি।
আদিতমারী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নবীন চন্দ্র বলেন, বাদির ফোনে ঘটনাস্থলে এলে বাদির লোকজন প্রতিপক্ষের ঘরের একটা বেড়া ভেঙ্গে দিয়েছে মাত্র। পরক্ষনে আমার নির্দেশে বাদি ঘটনাস্থল থেকে সড়ে যায়।
অপর পক্ষের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা(এসআই) রঞ্জু বলেন, আদালতের একটি পিটিশন তদন্ত করে ফিরে এসেছি। এরপর একই স্থানে অপর কর্মকর্তা পৌছলেও আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে তিনি বাদি বা বিবাদিকে ঘর তুলতে বা সড়াতে কোন নির্দেশ বা মন্তব্য করেন নি বলেও দাবি করেন তিনি।
আদিতমারী থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ(ওসি তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে অফিসারকে পাঠানো হয়েছিল। এ সময় সৃষ্ঠ উত্তাপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রন করে নালিশী জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।