ঝিানাইদহের শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতায় বেদখল হয়ে গেছে জিকে প্রকল্পের প্রধান সেচ খালের জায়গা। প্রধান সেচ খালের দুই ধার দখল করে গড়ে উঠেছে ৩ শতাধিক অবৈধ কাঁচা পাকা দোকান ঘর। অনেকেই জায়গা দখল করে নির্মান করেছে বড় বড় দালানকোঠা ও মার্কেট।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার কাতলাগাড়ী বাজারে প্রধান সেচ খালের দুই ধার দখল করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে শুরু করে বড় বড় পাকা ভবন অবৈধভাবে নির্মান করা হয়েছে। সেচ খালের বুকে সারিবদ্ধভাবে আরসিসি পিলার তুলে এসকল দোকানপাট নির্মিত হয়েছে। যুগ যুগ ধরে অবৈধ দখল অব্যাহত থাকলেও দেখার কেউ নেই।
তবে প্রধান সেচ খালের বুকে আরসিসি পিলার তুলে যে সকল দোকানীরা পাকা ঘর নির্মান করেছে তাদের দাবী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসকল পাকা ইমারত তৈরী করা হয়েছে। এছাড়াও ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন নিয়মিত দোকানীদের কাছ থেকে লোক মারফত বার্ষিক টাকা আদায় করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাতলাগাড়ী বাজারের ৩৮৩০ ও ৩৮৩১ দাগে ১৯৬২ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জমিতে এই কর্মকর্তা ৩ তলা পাকা ভবন নির্মানে ৬ শতক জমি গোপন আতাত করে ছেড়ে দিয়েছেন। পুরাতন বাখরবা গ্রামের জনৈক জামাল উদ্দিন গং অবৈধ প্রক্রিয়ায় কাতলাগাড়ী নতুন বাজারের প্রধান সেচ খালের টপলাইন দখল করে ৩ তলা ভবন নির্মান কাজ চলমান রেখেছে। পাউবোর একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশে নির্মানাধীন ভবন নিয়ে ইতোমধ্যে এলাকায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে দখলদার জানান, তারা ১৯৮৪ সালে ২ দাগে বৈধভাবে ক্রয়কৃত জমিতে ভবন নির্মান করছেন। তবে ১৯৬২ সালের পাউবোর অধিগ্রহণকৃত খালের জমিতে কেন ভবন নির্মান করছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ উঠলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন দায়সারাভাবে জমি মেপে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নির্মানাধীন ভবনটির বৈধতা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জামাল উদ্দীন গং এর ক্রয়কৃত দলিলে ৩৮৩০ ও ৩৮৩১ দাগে ১১৭ শতকের মধ্যে ৭ শতক জমি ক্রয়ের উল্লেখ থাকলেও নির্দিষ্ট স্থান পরিস্কার না থাকলেও অজ্ঞাত কারনে দখলদার দাগের মাঝখানে প্রধান খাল দখলে নিয়েছে।
অবৈধ পন্থায় নির্মিত এ ভবনটি নির্মানের ফলে যেমন জনসাধারনের চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে। ঠিক তেমনই দখলদারের বৈধতা দেওয়ায় ভবিষ্যতে প্রধান সেচ খালটি দখল ও ভরাট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে করে হাজার হাজার হেক্টর চাষাবাদী জমিতে সেচ কাজ ব্যহত হবে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, মোবাইলে অভিযোগ পেয়েছি অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে ঝিনাইদহ প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের হলেও কিভাবে দখলদার ভবন নির্মান অব্যাহত রেখেছে তার সদুত্তোর মেলেনি।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজনকে ০১৮১৯৮৪৬১৯৯ নম্বরে একাধিকবার মোবাইল কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।