ফরিদপুরে কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করে ভাগ্য বদলেছে চাচা-ভাতিজার - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জানুয়ারী ২৯, ২০২১

ফরিদপুরে কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করে ভাগ্য বদলেছে চাচা-ভাতিজার



সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর :  
ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় এবার চাষ হয়েছে ব্যাপক পরিমানে কাশ্মীরি আপেল কুলের। গত দুবছর যাবত এই কুল চাষ শুরু হয়েছে ফরিদপুরে। এরমধ্যে গত দুবছর অল্প পরিমানে চাষ হলেও এবার আবাদ বেড়েছে বহু গুনে। এর কারন হিসেবে জানযায়, কাশ্মীরি আপেল কুল দেখতে অনেকটা মাঝারি সাইজের আপেলের মতো। রং আপেলের মতো লাল ও সবুজ। স্বাদে আপেলের থেকেও মিষ্টি। যা পুষ্ঠি গুণে অনেক ভরপুর বলছে কৃষি সম্প্রসারন অফিস।  


সরোজমিনে যাওয়া হয়েছিলো ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর এলাকার আলাল ও ওহিদ দুই চাচা-ভাতিজার বাগানে। তারা দুজন এতদিন কলা চাষ করতেন। বার বার লোকসান হওয়ায় এবার সেই কলা চাষ বাদ দিয়ে সাড়ে ৪ একর জমি লীজ নিয়ে চাষ শুরু করেছেন কাশ্মীরি আপেল কুলের। গত ৯ মাস আগে লাগানো গাছে এখন ফলন ধরেছে ব্যাপক পরিমানে। চার হাজার কুলের চারা লাগানো সহ নানা ভাবে খরচ হয়েছে প্রায় ৫-৭লাখ টাকা। তাদের দুজনের ধারনা সব খরচ বাদে এবার তাদের লাভ হবে ১০-১৫ লাখ টাকার মতো। বিক্রি শুরু করেছেন গত কিছুদিন যাবত। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। একই সাথে নিরাপদ ও বিষমুক্ত কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করে প্রথম বছরেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তারা। 


প্রচলিত আপেল কুল ও বাউকুলের থেকে আকারে বেশ বড় সাইজের এই কাশ্মীরি আপেল কুল। নতুন এ জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। পুরো বাগান জুড়েই লাল-সবুজের সমারহ। লাভের আশায় দুই জনের মুখে দেখা দিয়েছে হাসিক ঝিলিক। সাধারণত আপেল কুল ও বাউকুল ৩০ থেকে ৬০ টাকা প্রতি কেজি পাইকারি দরে বিক্রি হয়। কিন্তু নতুন জাতের কাশ্মীরি কুল ৭০ থেকে ৯০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। 


বাগানের মালিক আলাল ও ওহিদ জানান, সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের আক্কাস আলীর বাগান দেখতে গিয়ে কাশ্মীরি কুল চাষ করার আগ্রহ আসে তাদের। এরপর চারা সংগ্রহ করে শুরু করেন বাগান। তিনি বলেন বাগানে যেভাবে ফল এসছে তাতে এবার তাদের ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে ধারনা করা যায়। তিনি আরো বলেন এখন আমরা কুল চাষের পাশাপাশি এই কুলের চারা বিক্রি করার উদ্যোগ গ্রহন করেছি। আশা করছি খুব দ্রæত চারা বিক্রি করতে পারবো। 



এভাবে জেলার অন্যসব উপজেলার উঠতি বেকার যুবক ও চাষীরা নতুন জাতের এই কাশ্মীরি আপেল কুলচাষ করে তাদের ভাগ বদলের দারপ্রান্তে রয়েছেন। 


জানাযায়, ১ বিঘা জমিতে ১৩০-১৪০টি চারা লাগানো যায়। ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১ বিঘা জমিতে কুল বাগান করে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। কুল চাষেই ঘুরে যেতে পারে বেকার যুবক ও চাষীদের ভাগ্যের চাকা এমনটাই ধারনা করছেন এর সাথে জরিতরা।  


ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোঃ হযরত আলী বলেন, এবার জেলায় সব ধরনের কুল চাষ মিলিয়ে চলতি বছরে ২৩০ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কাশ্মীরি আপেল কুল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এবং এর চাহিদাও অনেক বেশি রয়েছে। একই সাথে অনেকে এর কলম ও চারা বিক্রি করেই স্ববলম্বী হচ্ছেন। আমরা চাষীদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য, সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে চলছি। তিনি বলেন এই চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেক বেকার যুবক ও চাষীরা কাশ্মীরি অপেল কুল ব্যাপক ভাবে শুরু করেছেন জেলায়। 


এ চাষের সাথে জরিতদের দাবি কৃষি বিভাগ কাশ্মীরি কুল চাষে সহযোগিতা করলে তারা সামনের দিনে আরো অধিক পরিমানে কাশ্মীরি কুল চাষ বৃদ্ধি করতে পারবে। এর মাধ্যমে জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশে রপ্তানিতেও তারা ভূমিকা নিতে পারবে বলে আশা তাদের।

Post Top Ad

Responsive Ads Here