কুষ্টিয়ায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, জুন ২৩, ২০২১

কুষ্টিয়ায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ


 

সময় সংবাদ ডেস্কঃ


কুষ্টিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পিয়ন আক্কাস আলী ও কর্মচারী মুকুল হোসেনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেলের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

ঘুষ দাবি ও আদায়ের ঘটনাটি আব্দুর রাফেল তার ফেসবুকে প্রকাশ করলে বিষয়টি নিয়ে চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর ওই অফিসের কর্মকর্তারা তাকে ফোন দিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে যেতে বলেন। 


কুষ্টিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ঘুষ লেনদেন দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও সেখানে আগে ঘুষ পরে কাজ। ঘুষ দিলে কাজ হয়, না হলে হয়রানিতে পড়তে হয় সেবা গ্রহীতাদের। সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার পর ঘুষ না দিলে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। 


জানা গেছে, সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহের কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে একটি দলিলের জন্য যান সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল। তার বড় ভাই ও ব্যাংক কর্মকর্তাও সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন। তিনি জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার জন্য গিয়েছিলেন। অফিসের ক্লার্ক মুকুল ও পিয়ন আক্কাস রেজিস্ট্রির পর তার কাছে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। তিনি ৩০ হাজার টাকার রশিদ চাইলে তারা জানায়, কোনো রশিদ তারা দিতে পারবে না। সে সময় পরিচয় দিয়ে কার্ড দেখালে তারা এ জন্য পাঁচ হাজার টাকা কমিয়ে ২৫ হাজার টাকা দিতে বলেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল জানান, তিনি নিজের পরিচয় দেন। তারপরও দাবিতে অটল থাকেন পিয়নরা। এ পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে তার বড় ভাই ১০ হাজার টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করেন। পরে বিষয়টি ফেসবুকে তুলে ধরেন তিনি। ঘটনাটি জানাজানির পর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও দলিল লেখকরা বৈঠক করেন। এরপর আব্দুর রাফেলকে ফোন দিয়ে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং টাকা ফেরত নেয়ার অনুরোধ জানান। পরে তিনি টাকা ফেরত না নিয়ে ঢাকা চলে আসেন।


সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রাফেলের দলিলটি ব্যাংকের মর্টগেজ দলিল। বিষয়টি দেখভাল করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। এটির জন্য টাকা নেয়ার কথা নয়। তারপরও অফিসের কয়েকজন স্টাফ টাকা দাবি করেছে। এটার সঙ্গে দলিল লেখকদের কোনো সম্পর্ক নেই।


এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফেল বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস একটি সরকারি অফিস। আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পরও তারা টাকা দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত। আমি প্রতিবাদ জানিয়ে বলি, আমি জমি রেজিস্ট্রি করব না। 


তখন আক্কাস আমাকে বলে, জমি রেজিস্ট্রি না করলে না করেন। সে সময়ে আমি তাদের সঙ্গে তর্ক করলেও তারা আমার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে কাজ করে। পরিচয় দেওয়ার পর আমাকে ছাড়েনি। তাহলে সাধারণ জনগণ কীভাবে ভোগান্তির শিকার হয়, তা সহজেই বোঝা যায়। এটার একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন।


এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে বিএম আব্দুর রাফেল জমি রেজিস্ট্রি করতে অফিসে এসেছিলেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি তার কাজ করে দিয়েছি। তার কাছে কয়েকজন টাকা চেয়েছিল বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগটি আমরা অবশ্যই তদন্ত করে দেখব। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here