করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যেই সমাবেশ ও শোডাউন করে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন আওয়ামীলীগ নেতার - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, জুন ২৪, ২০২১

করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যেই সমাবেশ ও শোডাউন করে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন আওয়ামীলীগ নেতার

 


ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে করোনা পরিস্থিতির চলমান উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকির মাঝেও বিশাল শোডাউন ও গণসমাবেশ করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান।  


১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ফরিদপুর নির্মিত আয়েশা শরিয়ত উল্যা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ৫ তলা ভিতবিশিষ্ট একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ও অন্যান্য ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বোয়ালমারীর কাদিরদি কলেজ সংলগ্ন ময়দানে এ  অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি।


করোনার সংক্রমণের চলমান উচ্চ ঝুঁকির মধ্যেই প্রায় সহস্রাধিক জনতার এ জমায়েতে বোয়ালমারী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী হতেও মোটর সাইকেল ও গাড়ির বহর নিয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা যোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।



অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দের নাম ঘোষণা করা হলেও তারা উপস্থিত হননি। অন্যান্যের মধ্যে এতে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালমারী পৌর মেয়র সেলিমুজ্জামান লিপন মিয়া, আলফাডাঙ্গা পৌর মেয়র সাইফুর রহমান সাইফার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিকুল মৃধা, সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে প্রধান অতিথির পেছনে তিনজন ব্যক্তিকে দেখা যায় যাদের দু'জনেরই মাস্ক ছিলোনা।


এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান বলেন, আমি যখন এই এলাকার সংসদ সদস্য ছিলাম তখন অনেক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ভবন করেছি। মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক, কালুখালি-ভাটিয়াপাড়া রেল আমার সময়েই করেছি। তবে আজ অনেক কথাই শুনতে পাই।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই লকডাউন হলো বোয়ালমারী পৌরসভায় দেয়া হয়েছে এখানে নয়। তারপরেও এই বিষয়টি নিয়ে ভাই আমাকে প্রশ্ন করেন না। 


এদিকে, করোনার এই উচ্চ সংক্রমণের মাঝে এভাবে গণ জমায়েত করা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ। তিনি বলেন, সাবেক এমপি ও বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমানকে ফোন করেছিলাম কিন্তু তিনি ধরেননি। এভাবে এই সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে গণজমায়েত করা ঠিক হয়নি। শারিরীক অসুস্থতার কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি জানিয়ে ঝোটন চন্দ বলেন, আমার প্রতিনিধি হিসেবে এসি ল্যান্ডকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তবে দুপুর তিনটার দিকে জনসমাগম বাড়তে থাকায় তিনি সেখান থেকে চলে আসেন।


শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, আমি দাওয়াত পেয়ে ছিলাম তবে যায়নি। এটা একটি রাজনৈতিক প্রোগাম এটাও একটি কারন। তবে আমার প্রতিনিধি ছিলো সেখানে উপস্থিত। আর করোনা কালিন সময়ে এমন প্রোগাম এই বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না। 


এব্যাপারে ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন বুলবুল বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এটি কতোটুকু যৌক্তিক তা বিবেচনার ভার ওই নেতার উপরেই ছেড়ে দিলাম। রাষ্ট্রের আইন মানার দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের উপর সমানভাবে প্রযোজ্য।


ফরিদপুরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের প্রেক্ষিতে বোয়ালমারী পৌরসভা সহ ফরিদপুর পৌরসভা, মধুখালী পৌরসভা ও ভাঙ্গা পৌর এলাকায় গত ২১ জুন থেকে কড়াকড়ি লকডাউন চলছে।  এই লকডাউনে কাঁচা বাজার, মাছবাজার ও চালের আড়তও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি হাসপাতালের নিকটতম ওষুধের দোকানগুলো ছাড়া অন্যান্য ওষুধের দোকান ও মুদি দোকানও বন্ধ রয়েছে।  


সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২৮১ জনের পরীক্ষার পর ফরিদপুরের পিসিআর ল্যাবে ১৩৪ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রমবর্ধিষ্ণু এই প্রবণতার রাশ টেনে না ধরলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে। 

Post Top Ad

Responsive Ads Here