ছাত্রদল দেয় পদ, ছাত্রলীগ দেয় পদোন্নতি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জুন ২৫, ২০২১

ছাত্রদল দেয় পদ, ছাত্রলীগ দেয় পদোন্নতি



ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে ছাত্রলীগের পদ দেয়া নিয়ে যেন বির্তক থামছেই না। একের পর এক বেড়িয়ে আসছে ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগের এসে বড় পদ বাগিয়ে নেওয়ার তথ্য। যা এখন রীতিমত ভাইরাল ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব ছবির মধ্যে বিএনপির প্রোগামে নাজমুল রয়েছে এমন ছবিও রয়েছে। 


এমনি ঘটনার মুখোমুখি এবার মুধখালী উপজেলা ছাত্রলীগ। এরআগে বেড়িয়ে আসে আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান রনি পদে থাকা অবস্থায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পাওয়া নিয়ে বির্তক। 


মধুখালী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হওয়া নাজমুল হোসেনকে ২০১৮ সালে যে প্যাডে রায়পুর ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক করে ছাত্রদলের কমিটির ঘোষণা করা হয়, তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে। এর ভিতর নব গঠিত মুধখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে তাকে দেয়া হয় মধুখালী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। নাজমুল অবশ্য এই ঘটনা ও ছবিকে কারসাজি বলছেন। 


ইউনিয়ন ছাত্রদলে থাকা এক নেতাকে পদোন্নতি দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা নিয়ে সংগঠনে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ।


যদিও নাজমুলের ছাত্রদল সম্পৃক্ততা অস্বীকার করছেন তাকে পদ দেয়া ও সুপারিশ করা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতারা। নাজমুল নিজেও দাবি করেছেন, তার পরিবার সব সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে।


ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, নাজমুলের ছাত্রদল সম্পৃক্ততার অভিযোগ তারাও শুনেছেন। এটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


গত ১২ জুন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও ফাহিম আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মধুখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।


এতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে রবিন মোল্যা ও ইনজামামুল আলম অনিককে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে নাজমুল হোসেনকে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হয়।


উপজেলা ছাত্রলীগের নব-নির্বাচিত সভাপতি রবিন মোল্যার দাবি, নাজমুল দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছেন। সেই হিসেবেই তাকে পদ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নাজমুল ছাত্রদল করতেন, বিষয়টি আমাদেরকেও অনেকেই জানিয়েছে, তবে খোঁজ নিয়ে এর কোনো সত্যতা পাইনি।’


তবে মধুখালী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওমর ফারুক জানান, ২০১৮ সালের উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটিতে নাজমুল হোসেন যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। ২০১৮ সালে ছাত্রদলের কমিটিতে আর তিন বছর পর ছাত্রলীগের কমিটিতে নাজমুল ঢুকে পড়েন। 


মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু বলেন, ‘নাজমুল হোসেন ছাত্রদলের রাজনীতি করত-এই বিষয়টি জানা নেই। তবে নাজমুল দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ছাত্রলীগের মিছিল মিটিংয়ে তাকে দেখেছি।


এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, ‘রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেই নাজমুল হোসেনকে ছাত্রলীগের পদ দেয়া হয়েছে। নাজমুল দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার সুপারিশেই তাকে পদ দেয়া হয়েছে।’ নাজমুল হোসেন ছাত্রদল করতেন- এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর সাত্তার শেখ বলেন, ‘নাজমুল হোসেনের বাড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যয়ন পত্র পেয়েই নাজমুলকে ছাত্রলীগের পদ দিতে আমি সুপারিশ করেছি।’ 


নাজমুল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ছাত্রদল করার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পারিবারিক কারণেই ছোটবেলা থেকেই আমিও ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছি।’


তিনি বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে এধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপনারা এলাকায় এসে খোঁজ নিয়ে দেখেন আমি এবং আমার পরিবারের সম্পর্কে।’


সম্প্রতি আলফাডাঙ্গা ছাত্রদল-ছাত্রলীগ নেতা রায়হান রনিকে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রদল এক সাথে বহিস্কার করে। বিষয়টি এরই মধ্যে জেলার টক অব দ্য কান্টিতে পরিনত হয়েছে। এর আগে এই বিষয়টি নিয়ে পত্রিকা ও টিভিতে নিউজ হওয়ার পর থেকে জেলা জুড়ে আলোচিত হতে থাকে বিষয়টি। বহিস্কারের এমন নজির সারা দেশের মধ্যে প্রথম বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। 


জেলার আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন দল ১২ বছর ক্ষমতায় এই সুযোগে সুযোগ সন্ধানীরা ঢুকে পড়ছে আওয়ামীলীগ সহ সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন পদে। তারা মূলত ফেসবুক ও নেতাদের ছবি পোষ্ট সহ নানা ভাবে তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছে। এছাড়াও তারা পদপদবি পেতে টাকা ঢালছে সেই সব নেতাদের পিছনে। 


এতে অনেক নেতা না বুঝেই তাদের পাতা ফাদেঁ পা দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে। এদের বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। 


উল্লেখ্য নব গঠিত বোয়লামারী ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকি বিবাহিত এই ঘটনা ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। তার বিবাহের রেজিষ্ট্রেশন কপি ঘুরে ফিরছে ফেসবুকে। সেখানে ২০১৫ সালের মার্চ মাসের ২২ তারিখের রেজিষ্টেশন যার নম্বর -৩০৪ দেয়া রয়েছে।  


এর আগে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে বিয়ে করা নিয়ে অভিযোগ উঠা ছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানজিদুল রশীদ রিয়ান ও ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু তারা পরস্পর আপন শালা দুলাভাই। এনিয়েও নানা কথা চাউর রয়েছে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে। এর ভিতর এই ঘটনা ঘটায় জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে বিষয়টি।


Post Top Ad

Responsive Ads Here