রাজশাহীতে প্রতিদিন ৮ হাজার লিঃ অক্সিজেন লাগছে- কমছে না মৃত্যুর মিছিল - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জুন ২৫, ২০২১

রাজশাহীতে প্রতিদিন ৮ হাজার লিঃ অক্সিজেন লাগছে- কমছে না মৃত্যুর মিছিল


 


ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ


রাজশাহীতে প্রতিদিন ৮ হাজার লিটার অক্সিজেন লাগছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের। কিন্ত করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হার কমছে না। এই বছর জানুয়ারিতে ২৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৭, মার্চ মাসে ৩১ জন, এপ্রিলে ৭৯ জন এবং মে মাসে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুন মাসের শুক্রবারসহ ২৫ দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) করোনা ইউনিটে এই পর্যন্ত ২৭৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 


রামেক হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপ ক্রমশয বৃদ্ধি হচ্ছে। প্রতিদিন শ্বাসকষ্ট নিয়ে যে সকল রোগী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসছেন। তাদের অক্সিজেন লেভেল ৯০ এর নিচে নামলেই ভর্তি করা হচ্ছে। অন্যদের চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে নিজ বাড়ি থেকেই চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০টি আইসিইউ বেডের বিপরিতে আবেদন ছিল ৯০ জনের। ফলে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এগুলো আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।


রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হয়েছেন আরো ৫৪ জন। একের পর এক সাধারণ ওয়ার্ড ফাঁকা করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে করোনা ইউনিঠ। তবুও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। বিপুল সংখ্যক করোনা রোগী ও তাদের স্বজনদের আনাগোনায় করোনা ছড়িয়ে পড়ছে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডগুলোতেও। প্রতিদিনই সাধারণ ওয়ার্ড থেকে করোনা ওয়ার্ডে নেয়া হচ্ছে আক্রান্ত রোগীদের। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানাচ্ছেন, রামেক হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন রয়েছে তা অন্য হাসপাতালে নেই। যার কারনে করোনা বিভিন্ন জেলা থেকে করোনা রোগির সংখ্যা রাজশাহীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে সাধারণ ওর্য়াডের রোগীরাও করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে।


রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. পার্থ মণি ভট্রাচার্য জানান, হাসপাতালে নরমাল ও কোভিড রোগী থাকছে। কোভিড রোগিদের স্বজনদের সাথে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অন্য মানুষের সাথে পরিবারের মানুষ আক্রান্ত হবে।


রামেক এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রামেক করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪২৩ জন। এদের সবাইকে অক্সিজেন সাপোর্ট আছে। করোনা ইউনিটের রোগিদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার লিটার অক্সিজেন লাগছে। রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। অক্সিজেন সরবরাহ আরও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আরেকটি অক্সিজেন ‘ভ্যাপোরাইজার’ লাইন লাগানো হয়েছে।


প্রতিদিন তিনটি ট্রাক হাসপাতালে তরল অক্সিজেন সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এই তরল অক্সিজেন ভ্যাপোরাইজার দিয়ে বাষ্পীভূত করা হচ্ছে। তা পাইপের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে চলে যাচ্ছ। প্রতিটির ওর্য়াডের রোগীর শয্যার পাশে অক্সিজেন পোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে রোগীদের অক্সিজেন নিতে পারছে। ২০টি আইসিইউ বেড রয়েছে ও ৬৯টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা রয়েছে, যা প্রায় আইসিইউর সমতুল্য। শুধু বাহিরের মানুষই নয়, করোনা আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন অন্যান্য সমস্যা নিয়ে ভর্তি থাকা সাধারণ ওর্য়াডের রোগীরাও। গত ৭ দিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সাধারণ ওর্য়াডের ১৬৯ রোগী। অক্সিজেনের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি রাখা হয়েছে, যাতে রোগী বেশি হলেও ব্যবস্থা নেয়া যায়। রামেকে ১৮৩টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে। বর্তমানে ৭২৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ আছে। তবে এক জন রোগীর জন্যই অক্সিজেন লাগছে অপ্রত্যাশিত। যার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন বেশি হচ্ছে। রামেক অরোও ২০০ সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here