সময় সংবাদ ডেস্কঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকূলীয় বদরখালী ইউপিতে দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বাড়িতে অন্য কেউ না থাকার সুযোগে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই জোড়া শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও ধর্ষক আবু হাসান মো. ইব্রাহিম জুয়েলকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ধর্ষিতার পরিবার সূত্র জানায়, সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের সময় চিৎকার দিলে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পুলিশের জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি অবগত করে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় পুলিশ ধর্ষিতা দুই শিক্ষার্থীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর জন্য পরিবারকে নির্দেশ দিলে তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করায় পরিবার।
এর আগে মঙ্গলবার থেকে পরদিন বুধবার ভোর উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের তিন নম্বর ব্লকের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লম্বাখালী পাড়ার একটি বাড়িতে চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার দুই শিক্ষার্থী স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এদিকে ঘটনার পর পরই ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবক কলেজ শিক্ষার্থী আবু হাসান মো. ইব্রাহিম জুয়েল আত্মগোপনে চলে গেছে। সে একই এলাকার জয়নাল আবেদীন ওরফে জনু মাঝির ছেলে। তাকে ধরতে পুলিশ এবং অন্য একটি বাহিনীর সদস্যরা অভিযান শুরু করেছে। তবে গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষণের শিকার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বাবা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি রুজু করা হয়।
মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর মা-বাবা অসুস্থ এক সন্তানকে পাশের উপজেলা মহেশখালীতে কবিরাজের কাছে নিয়ে যান চিকিৎসা করাতে। এ কারণে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর পুরো বাড়ি ফাঁকা হয়ে পড়ে। তাই পাশের বাড়ির অনেকটা সমবয়সী দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বাড়িতে রাতে থাকার জন্য অনুরোধ করে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
এই সুযোগে যুবক ইব্রাহিম সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বাড়িতে কৌশলে ঢুকে পড়ে। এ সময় ছোরার ভয় দেখিয়ে প্রথমে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে এবং ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। এতে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে পড়লে সেই সুযোগে ধর্ষণ করে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকেও। এ সময় সপ্তম শ্রেণীর ওই শিক্ষার্থী চিৎকার দিলে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর ঘুম ভেঙে যায়। এই অবস্থায় দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী পুলিশের জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে। পরে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার পর ধর্ষক আবু হাসান মো. ইব্রাহিম জুয়েল পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ৯৯৯-এ ফোন করার পর পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এর পর পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয় দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করাতে। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানা গেছে।
ওসি বলেন, জোড়া শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক আবু হাসান মো. ইব্রাহিম জুয়েলকে আসামি করে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বাবা বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলা রুজু করেছেন। পুলিশের একটি টিম ধর্ষককে গ্রেফতারে বিভিন্নস্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাকে ধরতে প্রযুক্তির সহায়তাও নেয়া হচ্ছে।