সময় সংবাদ ডেস্কঃ
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কারান্তরীণ টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ অভিযুক্ত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত চার্জ গঠনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। একই সঙ্গে আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে, রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রিজনভ্যানে করে জেলা কারাগার থেকে ১৫ আসামিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়। প্রিজনভ্যান থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের কাঠগড়ায় তোলা হয়।
এদিকে গত ১৩ জুন দুপুরে একই আদালতে বরখাস্ত ওসি প্রদীপের জামিন আবেদন শুনানির কথা থাকলেও তা ২৭ জুন করা হবে বলে দিন ধার্য করা হয়।
গত বছরের ৩ জুলাই ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র ধারণের কাজে কক্সবাজারে যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফিরছিলেন। ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়েছে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে। এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। এছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেফতার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেফতার ১৫ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম। মামলায় অভিযুক্ত ওসি প্রদীপের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব দীর্ঘ ১১ মাস পলাতক থাকার পর ২৪ জুন আত্মসমর্পণ করেন। এরপর নির্ধারিত দিন হিসেবে চার্জগঠন শুনানিতে সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।