সময় সংবাদ ডেস্কঃ
কুয়েতে দণ্ডপ্রাপ্ত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে জন্য আগামী ৬ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এ দিন ধার্য করেন। সোমবার সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল-আমিন হোসেন রাজধানীর পল্টন থানায় ‘মানি লন্ডারিং’ প্রতিরোধ আইনে এ মামলা করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন, পাপুলের ব্যক্তিগত কর্মচারী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির, জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা, জেসমিন প্রধানের মালিকানাধীন কোম্পানি জে-ডাব্লিউ লীলাবালী ও কাজী বদরুল আলম লিটন। এছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আরো পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা মানবপাচারকারী চক্র। তারা বিভিন্ন সময় ৩৮ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন। যার সঙ্গে পাপুল ও তার মেয়ের প্রতিষ্ঠান জড়িত।
এ মামলায় গত ২২ ডিসেম্বর পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২৭ ডিসেম্বর তারা দুজন আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। শুনানি শেষে আদালত দুইজনের পাসপোর্ট জমাদান সত্ত্বে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জামিন দেন।
একইদিন পাপুলসহ চার জনের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে ৯২টি তফসিলভুক্ত স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে সিআইডির আবেদনের পর পাপুলসহ আটজনের আরো ৫৩ টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি আদালত বিশ হাজার টাকা মুচলেকায় পাপুলের স্ত্রী ও মেয়েকে স্থায়ী জামিন দেন।
এদিকে গত ২২ ডিসেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২৭ ডিসেম্বর পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ে ওয়াফা ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এরপর আদালত শর্তসাপেক্ষে তাদের জামিন দেন।
গত ১১ নভেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে পাপুলসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, পাপুলের স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলাম। এ মামলাটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৫ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কুয়েতের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে পাপুলের নামে জমা থাকা ১৩৮ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। এরপর গত ২৮ জানুয়ারি অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মামলায় কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের চার বছরের কারাদণ্ড দেন কুয়েতের আদালত। একইসঙ্গে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।