২০ সেকেন্ডের মিশন: তিন বছরে দুই শতাধিক ছিনতাই - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, জুন ২৬, ২০২১

২০ সেকেন্ডের মিশন: তিন বছরে দুই শতাধিক ছিনতাই



সময় সংবাদ ডেস্কঃ


 চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা এলাকা থেকে স্বামী-স্ত্রীসহ চার সদস্যের একটি ছিনতাইকারী চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের একজন ২০ সেকেন্ডের মধ্যে চলন্ত সিএনজির পেছনে উঠে ত্রিপল কেটে যাত্রীর মোবাইল, ব্যাগ ছিনতাইয়ে সক্ষম। তিন বছরে দুশতাধিক ছিনতাই করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে তারা।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- আনোয়ারা থানার বরুমচড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আকাশ, তার স্ত্রী তানিয়া বেগম, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের খাদু সেরাং বাড়ির বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম।


বৃহস্পতিবার রাতে ডবলমুরিং থানার বাদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আকাশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১১টি মোবাইল, হীরার টুকরো, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ।


ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গত রমজানে একটি সিএনজি থেকে এক তরুণীর ব্যাগ ছিনিয়ে পালিয়ে যায় আকাশ। সেই ঘটনার তদন্তেরনেমে আকাশের সন্ধান পায় পুলিশ। তখন থেকেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে এবং চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।



তিনি আরো বলেন, ছিনতাইকারী আকশের প্রধান টার্গেট সিএনজি। চলন্ত সিএনজিতেই অভিনব পন্থায় সে পেছনে উঠে পড়তো। সিএনজির ত্রিপল কেটে ভেতরে থাকা যাত্রীর ব্যাগ, মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যেত। পুরো ঘটনা ঘটাতে সবমিলিয়ে তার সময় লাগত মাত্র ২০ সেকেন্ড! এমনকি গাড়ির জানালার পাশে বসা যাত্রীদের মোবাইল ছিনিয়ে নিতে সে পারদর্শী। বিশেষ করে গাড়ির জানালার পাশে বসা কোনো যাত্রী মোবাইলে কথা বললে চোখের পলকেই সে মোবাইল নিয়ে সটকে পড়তো।


পুলিশ জানায়, তিন বছরে দুই শতাধিক ছিনতাই করেছে এই চক্রটি। চক্রের হোতা আকাশ পেশাদার ছিনতাইকারী। সে ১০ বছর ধরে এ অপরাধে যুক্ত। আকাশ আগে নারী ছিনতাইকারী ফারজানার গ্রুপে কাজ করত।


ওসি মহসীন বলেন, ফারজানার গ্রুপ থেকে বের হয়ে আকাশ এখন নিজেই গ্রুপ গঠন করে ছিনতাই করে। গত তিন বছরেই সে দুই শতাধিক ছিনতাই করেছে। মূলত সে ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা পর্যন্ত ছিনতাই করে। এক সময় বন্দরের শ্রমিক হিসেবে কাজ করত সে। তখন বন্দরের গাড়ির চালকদের মোবাইল ছিনিয়ে নিত বিভিন্ন কৌশলে।


তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত তানিয়া ছিনতাইকারী আকাশের স্ত্রী। জেনেশুনেই আকাশকে বিয়ে করে তানিয়া। আকাশের সব অপরাধে সহযোগিতাও করেছে সে। ছিনতাইকৃত সব জিনিস থাকত তার কাছেই। আবার স্বামী গ্রেফতার হলে আদালত পাড়ায় ছুটত সে। এখন পর্যন্ত আকাশ তিনবার গ্রেফতার হয়। প্রতিবার জামিন করায় তার স্ত্রী। সর্বশেষ এপ্রিলেও গ্রেফতার হয়ে জেল খাটে আকাশ। এরপর স্ত্রী তানিয়ার চেষ্টায় জামিনে বের হয়ে ফের একই কাজে নামে।


পুলিশ জানিয়েছে, আকাশ ছিনতাই শেষে অধিকাংশ মালামাল ‘চোরাই’ মার্কেটে বিক্রি করে। এরমধ্যে কিছু মালামাল আবার ফেরি করেও বিক্রি করে। কিছুদিন আগে ছিনতাই করা একটি ব্যাগ থেকে হীরা পায় সে। গ্রেফতারকৃত আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নিজেকে পুলিশের সোর্স দাবি করেছে। আর তাজুল সম্পর্কে আকাশের মামা। এই পরিচয়ের সুবাদেই ছিনতাইকৃত মালামাল ভাগাভাগি করত তারা। ছিনতাইয়ের চারভাগের তিনভাগ মালামাল তাদের দিত আকাশ। উদ্ধার হওয়া আটটি হীরার মধ্যে দুটি পাওয়া গেছে আকাশের স্ত্রী তানিয়ার কাছে। বাকি ছয়টি হীরা উদ্ধার করা হয়েছে আনোয়ার ও তাজুলের কাছ থেকে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here