মেয়াদোত্তীর্ন কুড়িগ্রাম রেলস্টেশনের এপ্রোচ কাজ, বদলীর হুমকিতে প্রকৌশলী - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, জুন ২০, ২০২১

মেয়াদোত্তীর্ন কুড়িগ্রাম রেলস্টেশনের এপ্রোচ কাজ, বদলীর হুমকিতে প্রকৌশলী


 


সময় সংবাদ ডেস্কঃ


নির্মাণ কাজ সম্পন্নের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও শেষ হয়না কুড়িগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশনের এপ্রোচ রোড নির্মাণ কাজ। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদের তারিখ থেকে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারনে কাজের স্থায়ীত্বের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।


তাছাড়া তদারকির দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে প্রকৌশলীকে বদলী করে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।


কুড়িগ্রাম জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন "কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস" এর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস চালুর পর থেকেই কুড়িগ্রাম নতুন রেলস্টেশনের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করে রেলকর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের নিরাপদে ট্রেনে উঠা-নামার জন্য স্টেশনের পূর্বের জরাজীর্ণ প্লাটফরম ভেঙ্গে এক কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের সুন্দর ও আধুনিক প্লাটফরম নির্মাণ করা হয়।


এছাড়াও আরকে রোড থেকে স্টেশনে ঢোকার এপ্রোচ রোড দীর্ঘ ৪০ বছরেও মেরামত না করায় এবং সেটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষ ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ফুটপাত, ড্রেন, ডিভাইডার ও এপ্রোচ রোড নির্মাণ কাজ শুরু করে। জানা গেছে, কাজটি দিনাজপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আমিন ট্রেডার্সের নামে হলেও মুলত মুল ঠিকাদার গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জের জহুরুল হক।


সরেজমিনে দেখা গেছে, এপ্রোচ রোডের দুইপাশে ড্রেন, কংক্রিট ব্লকের ফুটপাত, ডিভাইডার এবং কার্পেটিংসহ সব কাজ প্রায় শেষের দিকে হলেও গ্রিল ও সিলকোটের ফিনিশিং এখনো বাকী আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফিনিশিং সিলকোট যথাসময়ে না করার ফলে রাস্তাটির স্থায়ীত্ব কমে যাবে।


এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, সিলকোটের কাজ করার জন্য গত মে মাসের ৭ তারিখে ঠিকাদার উদ্যেগ নিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী


নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় কাজ বন্ধ করতে বলেন। এতে প্রকৌশলীর ওপর চড়াও হয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন ঠিকাদার। ওইসময় স্থানীয় লোকজন এসে নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে কাজ করা যাবে না মর্মে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে সাইট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাককে বদলী করে বাকি কাজ করা হবে বলে হুমকি দিয়ে ঠিকাদার কাজ না করেই চলে যান।


এব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের কথা অস্বীকার করে বলা হয়, দরপত্রে ৬০-৭০ গ্রেড অথবা ৮০-১০০ গ্রেডের বিটুমিন দিয়ে কাজ করার কথা উল্লেখ আছে।


সাইট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রাজ্জাক দরপত্রে দুই ধরনের গ্রেডের বিটুমিন উল্লেখ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আপনার সামনে সোনা এবং তামা দুটি অপশন থাকলে আপনি কোনটি বেছে নিবেন? ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন দিয়ে করা রাস্তা বেশি টেকসই হবে।


দুটি অপশন রাখার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, যদি ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন না পাওয়া যায় সেইক্ষেত্রে কাজ চলমান রাখার স্বার্থে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিকল্প অপশন রাখেন। সরাসরি হুমকির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, শুনেছি স্থানীয় লোকজন ও আমার স্টাফদের সামনে ঠিকাদার আমাকে বদলি করাবেন এবং চাকরি করা বের করে দিবেন এসব বলেছেন। ঠিকাদাররা সব সময় প্রভাবশালী হয় এবং তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে নানান কথা বলবেই।


নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কাজটি সম্পন্ন হচ্ছেনা কেন? এবিষয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনকে মোবাইলে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ঠিকাদারের ১৮০ দিন অতিবাহিত হয়েছে এটা ঠিক তবে ওনারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন এবং সেটি ডিজি মহোদয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া ঠিকাদারকে অবশিষ্ট কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।


দীর্ঘ ৪০ বছরের ভোগান্তি নিরসনে স্টেশন এপ্রোচ রোডের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here