সময় সংবাদ ডেস্কঃ
কোথাও আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক সংকেত দিবে একটি মানবরোবট ‘ব্লুবেরি’। শুধু তাই নয়, বাসার গ্যাস লাইনে লিকেজ থাকলেও মানুষজনের কাছে এই সতর্কবার্তা পৌছে দিবে রোবটটি। এরইসঙ্গে এই রোবট দিয়েই করোনার নমুনা সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়াও যে কেউ প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারবে।
নানা কাজের কাজি এই রোবটটি আবিষ্কার করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন শিক্ষার্থী। এটি তাদের দ্বিতীয় রোবট। এ রোবটটি তৈরিতে অর্থায়ন করেছে জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার)। সহযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আবু মুসা আসআরী।
যারা তৈরি করেছেন তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল, ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিষ্টু পাল এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিস্টেমস বিভাগের ১৩তম ব্যাচের জুয়েল নাথ। এই তিন তরুণের টিম ‘কোয়ান্টা রোবটিক্স’ এ ১ লাখ টাকা ব্যয়ে রোবটটি তৈরি করতে সময় লাগে সাড়ে তিনমাস।
গায়ের রং ব্লু ও রোবটটিতে র্যাস্পবেরি পাই ব্যবহার করার ফলে নাম দেয়া হয়েছে ‘ব্লুবেরি’।
আবিষ্কারকরা জানান, রোবটটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে রাসবেরি পাই মাইক্রোপ্রসেসর এবং আর্দুইনো মেগা মাইক্রোকন্ট্রোলার। রোবটটির সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যাবে, শুধু তাই নয় এর মধ্যে এমন কিছু সেন্সর রয়েছে যা বিভিন্ন ধরনের সিগন্যাল দিবে।
তারা আরো বলেন, রোবটটিকে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক কিংবা বাচ্চাদের যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মাধ্যমে নতুন নতুন কিছু শেখানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে। দেশের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোবট তৈরিতে আকৃষ্ট করার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা এটি। ভবিষ্যতে রোবটটিকে আরো উন্নত করা সম্ভব, এটাকে চাইলে প্রায় প্রত্যেক দিনই আপডেট করা যাবে।
টিম কোয়ান্টা রোবটিক্সের অন্যতম সদস্য এবং ব্লুবেরি আবিষ্কারকদের একজন সঞ্জিত মণ্ডল নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, আসলে সত্যি বলতে অনুভূতিটা অনেক দারুণ, কারণ নিজের বানানো কোনো একটা জিনিস দেখতে খুব ভালো লাগে ছোটোবেলা থেকেই।
সঞ্জিত মণ্ডল আরো বলেন, আমার শখ ইলেকট্রনিক্স। ছোটোবেলা থেকে অনেক প্রজেক্ট করি ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট বা বিভিন্ন সাইন্স প্রজেক্ট। আমি নাসা স্পেইস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ এর রিজিয়ন্যাল চ্যাম্পিয়ন ছিলাম। সামনে আরো ভালোকিছু করার সুযোগ চাই, সবার সহযোগিতা এবং আশীর্বাদ চাই।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সঞ্জিত মণ্ডলের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো তিন শিক্ষার্থী মিলে তৈরি করেছিলো দেশের চতুর্থ মানবাকৃতির রোবট ‘সিনা’। মাত্র দুইমাসে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা ব্যায়ে এ রোবটটি তৈরি করা হয়েছিলো।