সময় সংবাদ ডেস্কঃ
রাজধানী ঢাকায় ৭১ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও আইসিডিডিআরবির যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে পরবর্তী পাঁচ মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তির বাইরে ও বস্তিবাসী ৩ হাজার ২২০ জন মানুষের রক্তে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি এবং তার সম্ভাব্য কারণ নির্ণয়ে গবেষণা করে আইসিডিডিআরবি। ওই গবেষণায় গৃহস্থালি পর্যায়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণ, রক্তচাপ ও শরীরের পুষ্টি পরিমাপ এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই ৩ হাজার ২২০ জনের নমুনা বিশ্লেষণে এই ফলাফল পায় প্রতিষ্ঠানটি।
গবেষণায় বলা হয়, অ্যান্টিবডি তৈরিতে বয়স্ক ও তরুণদের হার প্রায় সমান। মহিলাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি হার ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ যা পুরুষদের ৬৬ শতাংশ। অ্যান্টিবডি পাওয়া ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের করোনার মৃদু উপসর্গ ছিল।
বস্তির বাইরের তুলনায় বস্তি এলাকার মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি বেশি। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে বস্তি ও বস্তির বাইরে বসবাসকারীদের উপর এ গবেষণা চালানো হয়।
অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি এমন মানুষের তুলনায় অ্যান্টিবডি হয়েছে এমন শরীরে জিংক এর উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে। স্বল্প শিক্ষিত, অধিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে এমন শরীরে রক্তে করোনা সংক্রমণ বেশি বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
বার বার হাত ধোয়ার প্রবণতা, নাক-মুখ কম স্পর্শ করা, বিসিজি টিকা গ্রহণ এবং মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের মধ্যে কম মাত্রার কোভিড উপস্থিতির হার দেখা গেছে।
গবেষণায় বলা হয়, কোভিড না হওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সেরাম জিঙ্কের মাত্রা বেশি। এটিই হয়ত গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের মৃদু লক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে ভিটামিন-ডি এর অপর্যাপ্ততার সঙ্গে কোভিড হওয়া ব্যক্তির কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। বরং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভিটামিন-ডি এর উচ্চ মাত্রার ঘাটতি দেখা গেছে।
বস্তির বাইরে, বস্তিসংলগ্ন এলাকার নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের তুলনায় বস্তিতে রক্তে কোভিডের হার বেশি। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে ঘন ঘন হাত ধোয়া, সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রভাব ফেলেছে। প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থাই মানুষের মাঝে সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করেছে বলে জানান গবেষকরা।