সময় সংবাদ ডেস্কঃ
খুলনা থেকে বেনাপোল হয়ে ভারতের কলকাতায় যাতায়াতের অন্যতম ব্যবস্থা ছিল রেলপথ। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ রেলপথ ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত থাকার পর ১৯৯৯ সালের শেষদিকে পুনরায় রেলপথটি চালু হয়। ওই সময় বেনাপোল-কলকাতা অংশের রেললাইন সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন যশোর-খুলনা-বেনাপোল রুটে চলাচল করত ট্রেন।
বর্তমানে এই রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে খুলনা ও ঢাকায় যাত্রী ও পণ্য আনা-নেয়া করা হয় ট্রেনে। তবে রেলপথটি দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত থাকায় কলকাতা থেকে বেনাপোলের ছোটআঁচড়া মোড় পর্যন্ত রেললাইন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সম্প্রতি দুই দেশের বাণিজ্যের গুরুত্ব বাড়ায় বাংলাদেশ অংশের ১ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে।
সরোজমিনে দেখা গেছে, ব্রিটিশ আমলের নির্মিত রেললাইন দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে পড়ে থাকায় বর্তমানে পণ্য পরিবহনে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয় দফায় এ রেলপথ চালু হলেও সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বেনাপোল বন্দরে ব্যবসায়ী সাহাবুদ্দিন গোলদার বলেন, বর্তমানে ভারতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এ রেলপথ দিয়ে আমদানি-রফতানিতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এছাড়া এ রেলপথ দিয়ে কলকাতার সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা যায়। পণ্য পরিবহন খরচও কম হয়। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ রেললাইন সংস্কার করলে বেনাপোল বন্দরে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা আরো বাড়বে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। এ বন্দরের মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। বেনাপোল-কলকাতা রেল যোগাযোগ উন্নত হলে রাজস্ব আরো বাড়বে। পদ্মাসেতু চালু হলে ব্যবসায়ীদের কাছে এ বন্দরের গুরুত্ব আরো বাড়বে।
বেনাপোল রেলস্টেশনের মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, জিরো পয়েন্ট থেকে ছোটআঁচড়া মোড় পর্যন্ত রেলপথ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালাতে হতো। সবসময় যাত্রী ও পণ্যবাহী ওয়াগন নিয়ে আমরা বিপদের আশঙ্কায় থাকতাম। ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ উন্নত করতেই ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে ঝুঁকি ও খরচ কমার পাশাপাশি সময় বাঁচবে।
রেলওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ওলিউর রহমান বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক গুরুত্ব অনুধাবন করেই বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে ১ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে দেড় কোটি টাকা, সময় লাগবে প্রায় দেড় মাস।