ফরিদপুরে গরু নিয়ে মহাবিপাকে খামারিরা, নেই আশার আলো - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

রবিবার, জুলাই ১১, ২০২১

ফরিদপুরে গরু নিয়ে মহাবিপাকে খামারিরা, নেই আশার আলো



ফরিদপুর প্রতিনিধি :
আর কদিন পেরুলেই পবিত্র ঈদুল আজহা। এরই মধ্যে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। বিশেষ করে ফরিদপুরের করোনা অবস্থা আরো ভয়াবহ। প্রতিদিন এখানে বাড়ছে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা একই সাথে মৃত্যু। 


এই করোনায় গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ফরিদপুরের গরু খামারিরা। কোথায় নিয়ে গরু বেচা বিক্রি করবেন এখনো নির্ধারন না থাকায় মহা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। এদিকে প্রাণিসম্পদ দফতর এর তরফ থেকে অনলাইনে গরু বেচাকেনার কথা বলা হলেও তা খামারীরা বুঝে উঠতে পারছেন না। গো-খামারিরা তাদের গরুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।


ফরিদপুরের সব চেয়ে বড় গরু বানিয়েছেন সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের ফতেপুর এলাকার খামারী তৈয়বুল নামে এক বেকার যুবক। তার গরুটি শখ করে নাম রেখেছেন “বস”। গরুটির ওজন হবে ১২’শ কেজির উপরে। এই গরুটি ছাড়াও তার খামারে রয়েছে আরো ১৩টি গরু। প্রতিটি গরু এবার কোরবানির ঈদে বিক্রি করার কথা। দিন চলে যাচ্ছে এরই মধ্যে ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে কবে কিভাবে বিক্রি হবে সেই কথাটি তার জানা নেই। এমন একই চিত্র জেলার প্রতিটি গরু খামারীর।   


একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর জেলায় দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করেছেন এবার। খরচ একারনে অনেক বেশি হয়েছে তাদের। যদি কোন কারনে গরু বিক্রি না হয় তবে কি হবে এই সব খামারীদের ? এমন প্রশ্নে খামারীদের ভাবিয়ে তুলেছে।  


খামারী তৈয়বুল জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক যত্নে তার খামারে ১৪টি গরুটি বড় করেছেন। এরমধ্যে শখ করে একটি গুরুর নাম রেখেছেন “বস”। গরুটির ওজন হবে ১২’শ কেজির উপরে। প্রতিটি গরু এবার কোরবানির ঈদে বিক্রি করার কথা। তিনি বলেন, কোরবানীর ঈদ সামনে কিভাবে বিক্রি হবে আমাদের গরু গুলো এই দুশ্চিন্তার ভিতর দিন কাটছে। তিনি সরকারের কাছে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন। 


মিলন নামে আরেক খামারী বলেন, আমাদের করোনার কারনে সব স্বপ্ন বিসর্জন হয়ে গেছে। সামনেও যে ভালো দিন আসবে সেটা আর মনে হচ্ছে না। অনলাইন সেটা আমরা বুঝি না। তাহলে কিভাবে গরু বিক্রি করবো। সরকারের উচিত আমাদের মতো খামারীদের কথা বিবেচনা করে কিছু একটা করা। না হলে পথে বসতে হবে।  


ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে প্রায় ৭ হাজার গবাদিপশুর খামারি রয়েছেন। এসব খামারে মোট গবাদিপশু আছে ৪৮ হাজার ৪৬৯টি। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৪৪৯টি গরু ও ১৬ হাজার ২০টি ছাগল, ভেড়া ও মহিষ রয়েছে। 


ফরিদপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরুল্লাহ্ মোঃ আহ্সান বলেন, আমরা প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে করে খামারীদের নিয়ে অনলাইন গরুর হাট বা অনলাইনে গরু বিক্রি করতে পারে। বিকল্প হিসেবে ৯টি উপজেলায় অনলাইনের মাধ্যমে পশু হাট খুলেছি। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি গরু বিক্রির অ্যাপস ওপেন করা হয়েছে। যেখানে বিক্রেতা ঘরে বসে পশু বিক্রি করতে পারে এবং ক্রেতা কিনতে পারবে। 


ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, আমরা অনলাইন এর মাধ্যমে গরুর হাট খুলেছি। যারা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে তারা এ জায়গা থেকে গরু বিক্রি  করতে পারবেন আর ক্রেতাও ছবি দেখে শুনে কিনতে পারবেন। এছাড়া চর এলাকার উন্মক্ত স্থানে হাট বসানোর কথা ভাবছি। যেখান থেকে করোনা বিধি মেনে গরু বেচা বিক্রি করা যায়। 


এদিকে জেলার খামারীদের দাবি, ঈদ ঘনিয়ে আসেছ অতি দ্রুত প্রশাসন একটি ব্যবস্থা গ্রহন করে গরু বেচাকেনার ব্যবস্থা গ্রহন করবে এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।