সময় সংবাদ ডেস্কঃ
কক্সবাজার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাদে এক রোহিঙ্গা তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় হাসপাতালের তিন কর্মচারীকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।
তারা হলেন- হাসপাতালের সিকিউরিটি নুরুল হক, লিফটম্যান আতাউর রহমান ও অফিস সহকারী মো. শফি।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী ওই হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর ছোট বোন। তিনি উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তবে হাসপাতালে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে কুতুপালংয়ের এমএসএফ-হল্যান্ড হাসপাতাল।
ঘটনাটি ১ জুলাই রাতের হলেও সেটি জানাজানি হয় শনিবার সকালে হাসপাতাল থেকে রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার পর। এ নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় তদন্তে নেমেছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, ১ জুলাই রাতে কক্সবাজার শহরের ‘জেনারেল হাসপাতাল কক্সবাজারের’ ছাদে নিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে হাসপাতালেরই তিন কর্মচারী।
জেনারেল হাসপাতাল কক্সবাজারের জিএম আরিফুল ইসলাম জানান, ২৭ জুন আর্ন্তজাতিক সংস্থা এমএসএফ-হল্যান্ডের উখিয়ার কুতুপাল হাসপাতালে রেফার করা এক রোহিঙ্গা নারী জরায়ু সমস্যা নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। এমএসএফ-এর এক নারী প্রতিনিধি তাকে এখানে নিয়ে আসেন। ওই রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে তার ছোট বোন ছিল।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১ জুলাই রাতে রোহিঙ্গা নারীর ওয়ার্ডে ওই তরুণী ছাড়া কেউ উপস্থিত ছিল না। সে সুযোগে তাকে কৌশলে ছাদে নিয়ে যান হাসপাতালের সিকিউরিটিন নুরুল হক, লিফটম্যান আতাউর রহমান ও অফিস সহকারী মো. শফি। পরে তিনজন মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান ভুক্তভোগী তরুণী ও তার বোন। পরে অভিযুক্ত তিনজনকে শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক চাকুরিচ্যুত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর একদিন পর পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া হলেও ওই রোহিঙ্গা রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজা নয়ন জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের খবর শুনেছেন। ঘটনাটি বিস্তারিত জানতে এমএসএফ-হল্যান্ড এর সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখা চাওয়া হবে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।