ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাশাহীতে দুটি হাত অচল এবং কোমড় ভাঙ্গা নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে ৫৫ বছর বয়সি নবীন। শাররীকভাবে অক্ষম তবুও নানা প্রতিবন্ধীকতার মাঝেও ভ্যানে ফেরি করে আম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে ত্রাণ দেয়া হলেও কিন্ত তার ভাগ্যে জোটেনি কোনো ত্রান।
রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালি থানা এলাকার সুচারন গ্রামের মৃত হাবিলের ছেলে নবীন (৫৫)। তার বয়সি অনেক ভিক্ষা করে জীবন যাপন করছে। কিন্ত নবীন ভিক্ষে করে বাচঁতে সম্মতি নয়। তাই সে কষ্ট করে নিজের অচল দুটি হাত এবং ভাঙ্গা মাজা নিয়ে ভ্যানে ফেরি করে আম বিক্রয় করে জীবন যাপন করে। এবিষয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নবীন বলে, যতদিন নিশ্বাস আছে ততদনি শত কষ্ট হলেও পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করবেন। নবীনের একটুও ভিটে মাটি বা চাষাবাদের জমি নেই। কিন্ত এই বয়সে এসে তার জীবন থমকে গেছে। একটি দূর্ঘটনায় এলামেলো হয়ে গেছে তার জীবন। বর্তমান শরীরেও আগের মতো শক্তি নেই, চলাফেরা করলে তার শ^াস-প্রশ^াসে অনেক কষ্ট হয়। সে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নবীন ভ্যানে ফেরি করে আম বিক্রি করছে। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, ভাগ্যে জোটেনি পড়ালেখা। ছোট থেকেই রাজমিস্ত্রীর কাজ শুরু করে। প্রায় ৮ বছর পূর্বে রাজমিস্ত্রির কাজ করার সময় একটি ব্লিডিং এর ছাদ থেকে পড়ে তার কোমড় ভেঙ্গে যায় এবং হাতের রগ ছিঁড়ে প্রতিবন্ধীর জীবন যাপন করছে। তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও মেয়ে। তাদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য ভ্যানে ফেরি শুরু করেন। বর্তমান তার অত্মিয় স্বজনরাও অপরিচিত মতো আচরণ করছে, প্রতিবেশী তাকে বোঝা মনে করছে।
পরিশেষে সংসারের প্রয়োজন মেটাতে অনেক কষ্টে একটি পুরাতন ভ্যান ক্রয় করেন। তারপর থেকেই ফেরি জীবন শুরু হয়। বর্তমান বয়সের কাছে তার এই ফেরি অনেক কষ্টের। প্রতিদিন খুব সকালে ফেরি করে আম বিক্রি করে বাড়িতে পৌঁছাতে রাত্রি হয়ে যায়। এই কষ্ট দেখে অটোরিক্সা চালকরা তার ভ্যানটি রশির মাধ্যমে বেধঁ তার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। ওই সময় তিনি কষ্টের সহিত বলেন, চলমান করোনার মহামারির সময় সরকারী কোন সাহায্য বা অনুদান তার পরিবারের কেউ পায়নি। সম্প্রতীও কোন সহযোগিতা তার কাছে আসেনি। এখন তার একমাত্র ভরসা এই ভ্যান।