সময় সংবাদ ডেস্কঃ
ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড- ইতালির। ২ মিনিটেই গোল পায় ইংলিশরা। তা শোধ ও করে দেয় ইতালি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ফলফাল নির্ধারিত না হওয়ায় ফলে গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। তাতেও ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত না হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এতেই ৫৩ বছর পর ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলো ইতালি।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোলটি করলেন লুক শ। খেলার দুমিনিটের মাথায় তিনি গোলটি দিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে এটি তার প্রথম গোল।
ডান দিক থেকে হ্যারি কেইনের বাড়ানো বলে কিয়েরান ট্রিপিয়ারের লম্বা ক্রস ধরে বক্সের সেন্টার থেকে গোল করেন তিনি।
এরপর ৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে লরেঞ্জো ইনসিগনের ফ্রি কিক। তার ডান পায়ের শট ইংলিশ রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু তারপর ক্রসবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে। ১৮ মিনিটে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ইতালি। কিছু পাসে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা। যদিও ইংল্যান্ডকে তা দুশ্চিন্তায় রাখছে না। ২৮ মিনিটে ইংলিশ রক্ষণের বাধায় কোনও পথ খোলা ছিল না ইনসিগনের। ৩০ গজ দূর থেকে লক্ষ্যে শট নেওয়ার চেষ্টা। বাঁ পোস্টের বাইরে দিয়ে বল মাঠের বাইরে।
চিয়েসা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আক্রমণে যান। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন। তা লক্ষ্যে ছিল না। তার নিচু ড্রাইভ ডানদিকের পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। এরপর আবারো সুযোগ পায় ইতিয়ালি। জিওভান্নি ডি লরেঞ্জোর পাসে সিরো ইম্মোবিলের ভলি, স্টোনসের ব্লকে আবারো হতাশ ইতালি। অতিরিক সময়ে লিওনার্দো বোনুচ্চির বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ডান পায়ের শট ক্রসবার থেকে অনেক উঁচুতে ছিল। ইতালির আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ।
এতেই প্রথমার্ধে ইংল্যান্ডের দেয়া গোল শোধ দিতে পারেনি ইতালি। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংলিশরা।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে লরেঞ্জো ইনসিগনের ফ্রি কিকে সমতা ফেরাতে পারেনি ইতালি। শট চলে গেল গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে। ৫৭ মিনিটে বাঁ দিক থেকে চিয়েসার নিচু ক্রস ট্রিপিয়ারের পায়ে লেগে বক্সে থাকা ইনসিগনর কাছে। বল ধরে কিছুটা এগিয়ে আড়াআড়ি শট নেন ইতালির ফরোয়ার্ড। সেখানে ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড বাধা হয়ে দাঁড়ান। ৬২ মিনিটে ইংল্যান্ডের তিন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে চিয়েসা নিচু শট নেন লক্ষ্যে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ সেভ করেন পিকফোর্ড। ৬৪ মিনিটে ইংল্যান্ডের ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ। মাউন্ট ম্যাসনের কর্নার কিক জায়গামতো বল পেয়েছিলেন স্টোনস। তার হেড ছিল গোলমুখে, কিন্তু দোনারম্মা তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠান।
৬৭ মিনিটে গোলের দেখা পায় ইতালি। ইনসিগনের কর্নার কিক ইংলিশদের বক্সে ফ্লি করে মার্কো ভেরাত্তির কাছে। তার হেড পিকফোর্ড দারুণ সেভে ফেরত পাঠালেও লিওনার্দো বোনুচ্চি ছিলেন সামনেই। গোলকিপারের নিচ দিয়ে বল ঠেলে জালে জড়ান তিনি। এতেই সমতায় ফেরে ইতালি-ইংল্যান্ড।
এরপর আক্রমণ-পালটা আক্রমণ চললেও আর গোলের দেখা পায়নি কোন দল। কেউ জেতেনি কেউ হারেনি তবে শেষ নির্ধারিত ৯০ মিনিট। এতেই খেলা গড়িয়ে গেলো অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অর্থ্যাৎ, ৯০ মিনিটের ম্যাচ গড়ালো এবার ১২০ মিনিটে।
অতিরিক্ত সময়েও খেলার কোন ফলফাল না হওায়া টাইব্রেকারে খেলা নিস্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়। টাইব্রেকারে স্বপ্নভঙ্গ ইংল্যান্ডের। তাদের ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় ইউরো শিরোপা জিতলো ইতালি।
২০০০ ও ২০১২ সালের পরাজিত ফাইনালিস্ট ১৯৬৮ সালে রোমে যুগোস্লাভিয়াকে হারিয়ে শেষ ইউরো জিতেছিল। রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় ইতালি।