সময় সংবাদ ডেস্কঃ
রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেল শিক্ষার্থী আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি ফারদিন ইফতেফার দিহানকে অভিযুক্ত আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন।
গত ৮ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. খালেদ সাইফুল্লাহ আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বুধবার সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে আগামী ১২ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দিহানের যৌনবধক ওষুধ ও মাদকসেবন করেছে কিনা তা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর গত ১০ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত দিহানের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেন। পরদিন গত ১১ জানুয়ারি দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া সাক্ষী হিসেবে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আদালতে জবানবন্দি দেন।
এর আগে, ৮ জানুয়ারি আসামি দিহান স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ এম আসাদুজ্জামান আসামি দিহানের ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশিদের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি আদালত দিহানের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৭ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এর এক ঘণ্টা পরে তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হয়ে যান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার পেপার্স আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। এই মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী দুপুর আনুমানিক ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে জানান, মেয়েটি তার বাসায় গিয়েছিলেন। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে। অফিস থেকে বের হয়ে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা হাসপাতালে পৌঁছেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তার কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় এসব মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৭ জানুয়ারি রাতে আনুশকার বাবা মো. আল-আমিন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় ইফতেখার ফারদিন দিহানকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর কলাবাগান থানার পুলিশ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান।