ভরণপোষণ দিতে না পারায় স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, নভেম্বর ১৩, ২০২১

ভরণপোষণ দিতে না পারায় স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম




জেলা প্রতিনিধিঃ



 
বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে। এমন সময় এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের ঘর থেকে আসে ‘বাঁচাও বাঁচাও, আমাকে মেরে ফেলল’ চিৎকার। এতে ঘুম ভেঙে যায় সুমাইয়ার মামি তানিয়া বেগমের। এরপর তিনি ডেকে আনেন পরিবারের বাকি সদস্য ও প্রতিবেশীদের। পরে সবাই মিলে দরজা ভেঙে রক্তাক্ত সুমাইয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়াকে ধারালো বঁটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেছে তারই স্বামী প্রবাসফেরত সাইফুল ইসলাম। ঐ সময় সুমাইয়াকে বাঁচাতে যাওয়ায় শ্যালিকা খাদিজা আক্তার সুমি ও শাশুড়ি নাছিমা বেগমকেও কুপিয়েছেন সাইফুল। সুমাইয়ার সঙ্গে তাদেরও কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করেছেন সুমাইয়া আক্তারের নানি জয়নব বেগম।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গত ১৭ এপ্রিল পার্শ্ববর্তী বাঁশতৈল ইউনিয়নের আমড়াতৈল গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সাইফুল প্রায় ১৩-১৪ বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন। গত বছর দেশে ফেরেন তিনি। এর আগে, নিজের উপার্জিত সমস্ত টাকা বাবার কাছে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বিয়ের পর সাইফুলকে কোনো টাকা দিচ্ছিলেন না বাবা বিল্লাল হোসেন। ফলে স্ত্রী সুমাইয়ার ভরণ-পোষণ ও পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছিলেন না সাইফুল। এ নিয়ে বাবা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল তার।

এদিকে, পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে আসায় তিন মাস আগে স্বামীর বাড়ি থেকে মায়ের বাড়িতে চলে আসে সুমাইয়া আক্তার। এখানেই গার্মেন্টস শ্রমিক মায়ের কাছে থেকে পড়াশোনা ও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকে। তার স্বামী সাইফুলও মাঝেমধ্যে এসে স্ত্রীর কাছে থাকত। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার সে স্ত্রীর কাছে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে স্বাভাবিকভাবে সাইফুল ও সুমাইয়া এক ঘরে ঘুমায়। তাদের পাশের ঘরেই ছিলেন সাইফুলের শাশুড়ি নাছিমা বেগম, শ্যালিকা সিমু ও সুমাইয়ার নানি জয়নব বেগম।



















সুমাইয়ার মামি তানিয়া বেগম বলেন, ভোরে হঠাৎ সুমাইয়ার ঘর থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও, আমাকে মেরে ফেলল’ চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজনের সহায়তায় দরজা ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় সুমাইয়াকে দেখতে পাই। পরে তাকে উদ্ধার করতে গেলে শাশুড়ি নাছিমা ও শ্যালিকা সুমিকেও ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে সাইফুল। এরপর স্থানীয়রা এসে সাইফুলকে আটক করে পুলিশে দেয়।

মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সুমাইয়া-সিমু ও নাছিমার হাত-মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫-২০টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের মধ্যে সুমাইয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার হাতের আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত সাইফুলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আইয়ুব খান। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানিয়েছে টাকা-পয়সা নিয়ে বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। তবে কী কারনে সে স্ত্রী-শ্যালিকা ও শাশুড়িকে কুপিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

Post Top Ad

Responsive Ads Here