"তিস্তার প্রভাব যমুনায়, চরাঞ্চলে ভাঙন আতঙ্ক | সময় সংবাদ"
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
উজান থেকে নেমা আসা পাহাড়ি ঢল ও তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে যমুনায়। এতে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও পানি বাড়ছে। এতে ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার চর ও নিম্নাঞ্চল। অপরদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যা ও ভাঙন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এসব এলাকায় পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে নানা রকমের ফসল। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (১৬ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।
অপরদিকে, যমুনা পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ এলাকসহ সব এলাকাতেই যমুনা নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আজ (১৬ জুন) সকাল ৬ টায় যমুনার পানি বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভাঙনের ব্যাপারে তিনি বলেন, যমুনায় পানি বাড়া বা কমার সঙ্গে সঙ্গে অনেক জায়গাতেই নতুনকরে ভাঙ্গণ দেখা দেয়। ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলোতে আমাদের হাতে থাকা ৩০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহে আমাদের হাতে আরও ৯৬ হাজার জিও ব্যাগ এসে পৌছাবে। যেগুলোও খুব দ্রুতই ফেলা শুরু করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যমুনায় যেভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে সেভাবেই পানি বাড়তে থাকলে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে ভাঙ্গণসহ যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।