"কিশোর প্রেমিককে বেদম পিটুনি, প্রেমিকার চিৎকারে মন গলে বাবা-ভাইয়ের | সময় সংবাদ"
জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুর সদর উপজেলায় কিশোর প্রেমিক আলিফ হোসেনকে প্রেমিকার বাবা, চাচা ও ভাই পাশবিক কায়দায় নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার রাতে উপজেলার নরুন্দি ইউপির নয়াপাড়া এলাকায় প্রেমিকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোর নরুন্দি নয়াপাড়া গ্রামের দরিদ্র ফল ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের ছেলে।
নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র আলিফ হোসেন জানায়, সে সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়নের নরুন্দি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এক বছর ধরে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একই শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। রোববার রাত ৯টার দিকে ফোন পেয়ে প্রেমিকার বাসার দিকে নয়াপাড়া এলাকায় দেখা করতে যায় ওই ছাত্র। এ সময় মুখোশপরা তিন যুবক তাকে জোর করে ধরে প্রেমিকার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রেমিকার বাবা কোহিনূর হোসেন ও সহোদর ভাই মনির হোসেন কাঠের চেয়ার ভেঙে ভাঙা কাঠ দিয়ে এবং জিআই তার দিয়ে বেদম পিটুনি দিয়ে মারাত্মক জখম করে।
আলিফ হোসেন আরো জানায়, নির্যাতনের একপর্যায়ে সোমবার ভোর ৪টার দিকে প্রেমিকা ঘরের অন্য কক্ষে চিৎকার করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে তার বাবা ও ভাই নির্যাতন করা বন্ধ করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় নরুন্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সোমবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে ওই ছাত্রকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ছাত্রের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ছেলেকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে ছেলের প্রেমিকার বাবা কোহিনূর হোসেন ও ভাই মনিসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো কয়েকজনকে আসামি করে ৬ জুন দুপুরে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, কিশোর আলিফ হোসেনের ওপর যে পাষবিক নির্যাতন করা হয়েছে তা সত্যি অমানবিক। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারসহ তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি করছি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ জানান, নরুন্দিতে অষ্টম শ্রেণির একছাত্রকে রাতভর নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনায় কোহিনূর হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্যান্য নির্যাতনকারীদেরকেও আটকের চেষ্টা চলছে।