![]() |
কোটি টাকা আয়ের মিশনে নেমেছে রাজশাহীর দলিয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা | সময় সংবাদ |
রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীতে পদ্মা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে নানা অবৈধ স্থাপনা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের যৌথ মদদে নদীর চর দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আনন্দ মেলার স্টলসহ বাস ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দলিয় নেতাকর্মী তাদের নিজেদের স্বার্থে এ নদীর চর দখল করে আয়োজন করা হয়েছে এই মেলা। ওই সকল অবৈধ স্থাপনা করা হচ্ছে প্রশাসনের অনুমোদনহীন।
পদ্মার চরের বাস্তবরূরেখা দেখতে গেলে নানা অনিয়মের তথ্য প্রকাশ হয়। মেলার নামে দর্শক টানতে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে প্রতারণার। এতে করে পকেট কাটছে সাধারণ মানুষের। আবার মেলায় প্রবেশের পর নানাভাবে হয়রানির শিকারও হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ নিয়ে চরস ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো আয়োজকদের পক্ষে থেকে নাজেহাল করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের।
জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে কোনো অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি মাসব্যাপী এ আনন্দ মেলার আয়োজনের। গত ১৯ মে থেকে রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠের নিচে পদ্মার চরে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী আনন্দ মেলা। এ মেলার জন্য ৪৩টি স্টল এবং ১টি সার্কাসের প্যান্ডেল করা হয়েছে। মেলার দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য খেলনা, নারীদের জন্য পোশাক, বাড়ির তৈজসপত্রসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ২টি করে সাকার্স শো আয়োজন করা হয়। অবৈধ এই মেলার প্রবেশ করতে ১০ টাকার টিকিট কাটতে হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে সার্কাস শো দেখতে চেয়ারে ১৩০ টাকা এবং গ্যালারির জন্য ১০০ টাকা করে জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে।
আয়োজকদের তথ্যমতে, নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মার শহর রক্ষার বাঁধের নিচেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব আলম খান ববিনের নেতৃত্বে এ মেলাটি চলমান রয়েছে। মেলার ৮ অংশিদারের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও যুবলীগ নেতা আপেল হোসেন শাহীন খান, ও শাহীন আলম। গত শনিবার বিকেলে এ মেলায় দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায় মেলায় বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি দিয়ে তারা প্রতারণা করছে। মেলার ৪৩টি স্টলের মধ্যে একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী বলেন, এখানে স্টল দিতে এক মাসের কথা বলে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ২৫০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। একইভাবে প্রতিটি স্টল থেকেই টাকা উত্তোলন হয়। মেলার আগত দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফি ১০ টাকা চলে যাচ্ছে আয়োজক কমিটির পকেটে। সার্কাসের প্যান্ডেল থেকে প্রতিদিন উত্তোলন হচ্ছে স৪০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা আয় করছেন আয়োজকরা।
এর বাইরে স্টল বরাদ্দের নামে আদায় করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের এ মেলায় অন্তত কোটি টাকা আয়ের মিশন নিয়ে নেমেছেন ওই প্রভাবশালীরা। কিন্তু পদ্মার চরে এ আয়োজন করা হলেও নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের অনুমতি।
এবিষয়ে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের নিকট থেকে ২০ দিনের জন্য মেলাটির অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে চর দখলের জন্য কোনো অনুমুতির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। মেলার আয়োজকরা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কোন কোনো অনুমতি নেয়নি। কিন্তু চর দখল করে মেলা কিভাবে চলছে তার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
আরো পড়ুন:ছুরিকাঘাতে শ্যালক হত্যা, দুলাভাই গ্রেফতার | সময় সংবাদ