বাজারে নতুন ধানের ছড়াছড়ি হলেও দেখা নেই নতুন চালের | সময় সংবাদ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, জুন ০৪, ২০২২

বাজারে নতুন ধানের ছড়াছড়ি হলেও দেখা নেই নতুন চালের | সময় সংবাদ

 

বাজারে নতুন ধানের ছড়াছড়ি হলেও দেখা নেই নতুন চালের | সময় সংবাদ
বাজারে নতুন ধানের ছড়াছড়ি হলেও দেখা নেই নতুন চালের | সময় সংবাদ

কৃষি ডেস্ক:



ভরা বোরো মৌসুমের নতুন ধান বাজারে ছড়াছড়ি। কিন্তু দেখা নেই নতুন চালের। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত সব দোকানেই মিলছে পুরাতন চাল। চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৩-৪ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দাম। অন্যদিকে, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে সরকার।


৪ জুন রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি চালের দোকানে পুরাতন চাল। নতুন চালের দেখা মেলেনি এখনো। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ধানের দাম বেড়েছে। তাই চালের দাম বাড়ছে।


অপরদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, সবকিছু হয় অদৃশ্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। বড় বড় চাল কলের মালিকরা লাখ লাখ মণ ধান চাল মজুদ করছে। সরকার সবকিছু মনিটরিং করছে ঠিকই কিন্তু কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। হাতের নাগালের বাইরে চালের সিন্ডিকেট। তাদের কারণেই চালের দাম বাড়ছে।


রাজশাহীর সাহেববাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী মো: বদিরুল আলম (সুজন) এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম পাবার আশায় চাল মজুদ করে রাখছেন মিল মালিকরা। চালের দাম বাড়ানোর নেপথ্যে একটা অদৃশ্য সিন্ডিকেট কাজ করছে। জনগণকে জিম্মি করে এক শ্রেণীর অসাধু মিল মালিকরা মুনাফা করতে চায়। এখন চলতি ধানের মৌসুমে বাজারে নতুন চাল আসেনি। এরকারণ চালের দাম আরো বাড়বে।


অপরদিকে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ মিল মালিকরা। তারা বলছেন, করোনায় অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া ধানের দাম অন্যান্য দু-পাঁচ বছরের চেয়ে বেশি। বেশি দামে ধান কেনার কারনে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া মিল মালিকদের অবৈধভাবে চাল গুদামজাত করার কোন সুযোগ নেই।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিল মালিক  বলেন, চালের দাম বেড়ে গেলে বিভিন্ন জায়গায় চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। 



বিভিন্ন জায়গায় লাখ লাখ মণ চাল বের হচ্ছে তাহলে আবার কেন দাম বাড়ছে? সরকার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বাইরে কিছু করতে পারবে না। কোন তদারকি নেই, বাজার মনিটরিং নেই। যা করলে লোক দেখানো। নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুরের মিলগুলোতে হানা দিক দেখা যাতে দুইদিনে চালের দাম কমছে। মিলাররা মজুদ করার কারণেই চালের দাম বাড়ছে।


ধান-চাল মজুদের কথা স্বীকার করেছেন খোদ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময় সভায় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ মিল মালিক বাজার থেকে ধান কিনলেও তারা উৎপাদনে যাচ্ছেন না। বাজারে নতুন চাল এখনও আসছে না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে তা গত বছরের পুরাতন চাল। তাহলে নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়?


মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারের চাল ব্যবসায়ী সুশীল কুমারের সাথে। তিনি বলেন,‘ চালের দাম বাড়ছে। আমরা আড়তে গিয়ে চাল পাচ্ছি না। ধানের দাম বাড়ার কারনে চালের দাম বাড়তি। এক সপ্তাহ আগের চেয়ে বর্তমানে প্রতিকেজি চালে বেড়েছে ৪-৫ টাকা। মিনিকেট চাল ৬০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৬৫ টাকা। 


আঠাস ৫০-৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকা, জিরাশাইল ৪ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য চালের কেজিতে বেড়েছে ১০-১২ টাকা। বাজারে বাসমতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা, কাটারিভোগ সিদ্ধ ৭০ টাকা, স্বর্ণা ৪০-৪২ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৪৮ টাকা, গুটিস্বর্ণা ৪৫, কালজিরা আতব ৯০ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়ে ১০০, চিনিগুঁড়া ১০০ টাকা থেকে ১১০, কাটারি আতপ ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


এপি চাউল ভান্ডারের মালিক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, চালের মোকাম ও মিলগুলোতে কারসাজি করে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়। খুচরা ব্যবসায়ীদের পকেটে লাভের টাকা আসে না। যা যায় সিন্ডিকেট আর পাইকারি ব্যবসায়ীদের পকেটে। আমরা যা চাল বিক্রি করছি সব পুরাতন চাল। সরকারের দায়িত্ব ভরা মৌসুমে গতবছরের পুরাতন চাল কেন তা বের করা। যদি ঠিকমতো মজুদদারদের বের করা সম্ভব হয় তাহলে চালের দাম এই সপ্তাহে কমবে।


চালের দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ জনগণ। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার এসেছিলেন চাল কিনতে। তিনি বলেন, চালের বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত শীঘ্রই একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করা। জনগণের উপর আর কতদিন জুলুম চলবে।



Post Top Ad

Responsive Ads Here