ফরিদপুর :
ফরিদপুরে গরুচোর সন্দেহে প্লাস দিয়ে দাত ও পায়ের আঙুলের নখ তুলে নেয়া ছাড়াও নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে জসিম মোল্লা (২৫) নামে একজন শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধীকে।
বর্তমানে তিনি অসুস্থাবস্থায় বোয়ালমারী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন গ্রামবাসী। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জসীম মোল্যা বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের নয়ানিপাড়া গ্রামের মৃত মো: শুকুর মোল্লার ছেলে। তিনি সরকারের ভাতাপ্রাপ্ত একজন বাক প্রতিবন্ধী।
জসিমের বড় ভাই নিজাম মোল্যা জানান, গত ২৩ জুলাই হতে তার ভাই জসিম নিখোঁজ ছিলেন। তারা জসিমের সন্ধান চেয়ে মাইকিং করেন এবং ফেসবুকেও অনেকে প্রচার চালায়। এ অবস্থায় গত ২৭ জুলাই গভীর রাতে কমলেশ্বরদি গ্রাম দিয়ে আসার পথে কয়েকজন মানুষ তাকে আটকায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় তার উপর এভাবে নির্যাতন চালিয়ে গুরুতর আহত করে। তারা জসীমকে পিটিয়ে সারা শরীর থেঁতলে দেয় এবং প্লাস দিয়ে দাত ও পায়ের নখ তুলে নেয়।
তিনি অভিযোগ করেন, খবর পেয়ে তারা জসীমকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের উপরেও চড়াও হয়ে কিলঘুষি মারে অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় নিজাম মোল্যা ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নং আমলি আদালতে ১১ জনের নামোল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ৮ থেকে ১০ জনকে আসামী করে একটি মামলা রুজু করেছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের শারবানদিয়া গ্রামের জাফর মোল্যা, আনোয়ার হোসেন, আওলাদ ফকির, জালাল মল্লিক, শামিম হক, জিতিস মাহাতুর, বাশার মোল্যা, বাচ্চু, সাহেব মল্লিক, আব্দুর রহমান, মনিরুল ইসলাম।
এদিকে আহত বাক প্রতিবন্ধী জসিমের চাচাতো ভাই নাসির জানান আমরা ওখানে যাওয়ার পরে জানতে পারি স্থানীয় দাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মুসা ও এক নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফর স্থানীয়দের নির্দেশ প্রদান করেন জসিমকে মেরে পুলিশে দিয়ে তুলে দেয়ার জন্য। তিনি এ ঘটনায় একই সাথে চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
প্রতিবন্ধী জসিমকে নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবিতে সোমবার সাড়ে ৫টায় উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের তালতলা বাজারে গ্রামবাসী মানববন্ধন করেছেন।
এব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতে পুলিশ আহতাবস্থায় প্রতিবন্ধী জসীমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তার বিরুদ্ধে গরু চুরির একটি অভিযোগ জমা দেয়া হয় থানায়। কিন্তু আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জসীম প্রকৃতই শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। তাই বাদি তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। তবে জসীমকে আহত করার ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।