রাতের অন্ধকারে পুকুর খননের মহোৎসব, হুমকির মুখে ফসলি জমি | সময় সংবাদ |
মোঃরিফাত ইসলাম,ফরিদপুর:
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামে রাতের অন্ধকারে ভেকু মেশিন দিয়ে প্রভাবশালী কামিন মিয়া নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিন ফসলি জমির ওপরে একের অধিক অবৈধ পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে পুকুর খননের প্রতিযোগীতায় মাঠে নেমেছে এক অসাধু পুকুর ব্যবসায়ী কামিন মিয়া। তিন ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধ ভাবে ছোট-বড় ১০ থেকে ১২ টি পুকুর খনন করেছে তিনি।পুনরায় এই অসাধু ব্যবসায়ী কামিন মিয়া ও শামীম মিয়া দুইভাই মিলে প্রভাব খাটিয়ে গত ২০ নভেম্বর নতুন করে পুকুর খননের কাজ শুরু করলে বিষয়টি স্থানীয়রা সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউর রহমানকে অবগত করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মাটি কাটার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় মাটি কাটার কাজের ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের চাবি জব্দ করেন।এরপর গত ২৪ নভেম্বর দিবাগত রাতে সরকারী নিয়ম তোয়াক্কা না করে পুনরায় এরা দুইভাই রাত ১০ টার দিক থেকে ভেকুমেশিন দিয়ে ভোর ৫ টা পর্যন্ত পুকুর খননের কাজ চালায়।যার ফলে ফসলি জমিতে পুকুর খননের জন্য পাশের জমির মালিকদের ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ও বৃষ্টির মৌসুমে পাশের জমি ধসে পড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা।অন্যদিকে স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, এসব জমিতে পুকুর খননের কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে পাশের কৃষি জমিগুলো। পুকুর খননকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা কেউ। ফলে চরম নিরুপায় হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। অসহায় কৃষকদের একটাই দাবি অবিলম্বে এই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে মাটি কাটার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় মাটি কাটার কাজের ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের চাবি জব্দ করি। এবং পরের দিন সকালে অসাধু ব্যবসায়ী শামীম মিয়া মাটি কাটবেনা এবং ঘটনাস্থল থেকে ভেকু মেশিন সরিয়ে নিয়ে যাবে বলে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এই মর্মে ভেকুর চাবি ফেরত দেওয়া হয়।এছাড়াও সরকারী নিয়ম তোয়াক্কা না করে প্রকাশে দিবালোকে এবং রাতের অন্ধকারে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এতে শত শত বিঘা ফসলি জমি নষ্ট করে, অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করে এসব মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এছাড়া মাটি ভর্তি ও খালি ট্রাক চলাচলের কারণে গ্রামের কাঁচা-পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ইটভাটায় মালিকরা ও মাটি ব্যবসায়ীরা ভেকু মেশিন দিয়ে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। এতে ফসলি জমি কমে যাওয়ায় খাদ্য ঘাটতির আশংকা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।