সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনা সদস্যদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান
ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী:
পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনা সদস্যদের সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
রাজশাহী সেনানিবাসে ৬টি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে সেনাবাহিনী প্রধান এ নির্দেশ দেন।
বুধবার সকালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। রাজশাহী সেনানিবাসস্থ “রেজিমেন্ট অব দি মিলিনিয়াম’ খ্যাত বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত হলে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া মেজর জেনারেল মোঃ ফয়জুর রহমান, বিএসপি, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এসময় একটি সম্মিলিত চৌকষ দল মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সেনাবাহিনী প্রধানকে সালাম প্রদান করেন। গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ইউনিটসম‚হ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা দেশ মাতৃকার সেবায় বিশেষ অবদান এবং বিবিধ প্রশিক্ষণ ও অপারেশনাল কর্মকান্ডে সাফল্যের স্বীকৃতি স্বর্রপ একটি ইউনিট বা রেজিমেন্টকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ এসপি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৩৭ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, ২৫ বীর (সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন), ২৯ বীর এবং ৩৪ বীর আজকের কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে এবং প্রধান অতিথির নিকট হতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহণ করে।
সেনাবাহিনী প্রধান রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্ত ইউনিট সম‚হকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রিয় বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স¤প্রসারণ ও আধুনিকায়ন হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সামরিক ঐতিহ্য অনুযায়ী যে কোন ইউনিটের জন্য রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। পরিশেষে প্রদান অতিথি সকলকে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে আহŸান জানান। পরিশেষে সেনাবাহিনী প্রধান রেজিমেন্টাল কালার প্রদান উপলক্ষ্যে একটি সুশৃঙ্খল, মনোজ্ঞ ও বর্ণিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারে বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন এবং এ রেজিমেন্টের উন্নয়ন, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও দেশে-বিদেশে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য, দেশমাতৃকার সেবায় সক্রিয় অবদানের কথা স¥রণ করেন। আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে এই রেজিমেন্টের সকল সদস্যের প্রতি আহŸান জানান। রেজিমেন্টাল কালার প্রদান এবং বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে সম্মানিত সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে উক্ত রেজিমেন্টদ্বয় এবং কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স এর সদস্যদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি ও প্রতিটি সদস্যের মাঝে আগামী দিনে দেশসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, এসবিপি, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল; বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মোঃ মোশফেকুর রহমান, এসজিপি, এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বগুড়া এরিয়া মেজর জেনারেল মোঃ খালেদ-আল-মামুন, পিবিজিএম, এনডিসি, পিএসসি’সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন পদবীর সেনাসদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।