জুরাছড়িতে ১২৬ ফুট বুদ্ধমূর্তির জীবনদান উৎসবে হাজারো পূর্ণার্থীর ঢল | সময় সংবাদ
মহুয়া জান্নাত মনি, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
দেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম ও সর্ববৃহৎ সিংহ শয্যা বুদ্ধমূর্তি নির্মিত হয়েছে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির দূর্গম জুরাছড়িতে। ১২৬ ফুট দীর্ঘ সিংহ শয্যা বুদ্ধমূর্তিটির জীবনদান উৎসবকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী দানোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে, বুদ্ধমূর্তির জীবনদান উৎসবে হাজারো পূর্ণার্থীর ঢল নেমেছে জুরাছড়ির সুবলং শাখা বন বিহারে।
বৃহস্পতিবার সকালে দ্বিতীয় দিনে পঞ্চ শীল প্রার্থনা, অষ্টপরিস্কার দান, ১২৬ ফুট সিংহ শয্যা বৌদ্ধ মুর্তি দানসহ বিভিন্ন দানের মধ্যদিয়ে পুনানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
দানোৎসর্গ অনুষ্ঠানের ধর্ম দেশনা দেন, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
এসময় রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ানসহ বিভিন্ন দেশ ও এলাকা থেকে আগত পূর্ণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পরমপূজ্য বনভন্তের স্মৃতি স্মারক হিসেবে জুরাছড়ি উপজেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ ও এ উপজেলা হতে ভিক্ষু হওয়া ভিক্ষুগণ (বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু) দেশের সর্ববৃহৎ ও দীর্ঘতম সিংহ শয্যা বুদ্ধমূর্তি নির্মাণের উদ্যোগ নেন ২০১২ সালে। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে বুদ্ধ মূর্তিটি নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে এসে নির্মাণকাজ শেষ হয়। বুদ্ধমূর্তির স্থপতি ছিলেন বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, প্রতিপদ দেওয়ান ও দয়াল চন্দ্র চাকমা। প্রকৌশলী ছিলেন তৃপ্তি শংকর চাকমা ও অঙ্কনের দায়িত্বে ছিলেন বিমলানন্দ স্থবির।
বিহার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো ধরণের সরকারি সহায়তা ছাড়াই দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকাদের দানের অর্থেই প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বুদ্ধমূর্তির নির্মাণ করা হয়। সাড়ে ১২ একর জায়গা জুড়ে গঠিত জুরাছড়ি উপজেলার সুবলং শাখা বন বিহারে নির্মিত বুদ্ধমূর্তির নিরাপত্তায় বিহারের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক ও বিহারের আশপাশের এলাকা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা হয়েছে। বুদ্ধমূর্তিটি বিহারে নির্মিত হলেও সাধারণ জনসাধারণের জন্য এটি পরিদর্শন উন্মুক্ত থাকবে। ইতোমধ্যে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ ছাড়াও পর্যটকরা বুদ্ধমূর্তিটি দেখতে যাচ্ছেন।