শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মেসিদের বিশ্বকাপ জয় - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২

শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মেসিদের বিশ্বকাপ জয়

 

শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মেসিদের বিশ্বকাপ জয়
শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় মেসিদের বিশ্বকাপ জয়

ক্রিয়া প্রতিবেদক/ফুটবল:

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ১২০ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। মূল ম্যাচ ৩-৩ গোলে ড্র হলে শিরোপার ভাগ্য গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। যেখানে আলবিসেলেস্তেদের জয় ৪-২ ব্যবধানে।


রোববার (১৮ ডিসেম্বর) লিওনেল মেসির হাত ধরে ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘোচায় আর্জেন্টিনা। এর আগে ১৯৮৬ সালে ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে শেষবার শিরোপা জিতেছিল দেশটি। 


লুসাইলে এদিন ম্যাচের ৩৬ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর ৮০ ও ৮১ মিনিটে দুটি গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলের সমতায় শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। মাত্র দুই মিনিটে ছিনিয়ে নেয়া লিড মেসির নৈপুণ্যে ১০৮ মিনিটে আবার ফিরে পায় আলবিলেস্তেরা। কিন্তু ১২০ মিনিটের ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র দুই মিনিট আগে আবার দুঃস্বপ্ন হয়ে আর্জেন্টিনার সামনে দাঁড়ান এমবাপ্পে। পেনাল্টি থেকে গোল করে তিনি দলকে ফেরান সমতায়। শেষ পর্যন্ত দুদলের শিরোপার ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে।


পেনাল্টিশুটআউটের শুরুতে অবশ্য ফ্রান্সকে লিড এনে দিয়েছিলেন ১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা এমবাপ্পে। বল জালে জড়াতে কোনো ভুল করেননি আর্জেন্টাইন জাদুকর লিওনেল মেসিও। কিন্তু ভুল করেন দুই ফরাসি অরলিঁয়ে চুয়ামেনি ও কিংসলে কোম্যান। চুয়ামেনির শট থাকেনি লক্ষ্যে, আর ক্যোমানের শট বামে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অন্যদিকে ফরাসি গোলরক্ষককে পরাস্ত করে পাওলো দিবালা, লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও গঞ্জালো মন্টিয়েল টানা গোল তুলে নেন। কোলো মুয়ানি জালের দেখা পেলেও সে গোল আসেনি কাজে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে নেয় আলবিসেলেস্তেরা।


এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। মেসিদের গতিময় আক্রমণ সামলাতে খাবি খাচ্ছিল ফ্রান্সের রক্ষণ।


ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ফ্রান্সের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি ও আলভারেজ। তবে বিপদ ঘটতে দেননি হুগো লরিস। পাঁচ মিনিটের মাথায় বাঁ প্রান্ত থেকে দূরপাল্লার শট নেন ম্যাক অ্যালিস্টার। অষ্টম মিনিটে ডি পলের শট ভারানের পায়ে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। 




নবম মিনিটে আর্জেন্টিনার একটি আক্রমণ থেকে জটলায় গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়। আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে রোমেরোর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে লুটিয়ে পড়েন গোলরক্ষক হুগো লরিস।


১৩ মিনিটে বলার মতন প্রথম একটি আক্রমণ করে ফ্রান্স। তবে রক্ষণভাগের তৎপরতায় বিপদমুক্ত হয় আলবিসেলেস্তেরা।


১৬ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে দারুণ আক্রমণ সাজায় আর্জেন্টিনা। ডি পলের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ডি বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। তবে ডি পলের পাসটি ধরতে পারেননি তিনি। বল পেয়ে যান ডি মারিয়া। তবে তার শট চলে যায় গোলবারের অনেক ওপর দিয়ে।


১৮ মিনিটে ডি বক্সের কাছে বা প্রান্তে ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। ফ্রি কিক থেকে জিরুদের হেড অল্পের জন্য বার উঁচিয়ে চলে যায়।


 ম্যাচের ২৩ মিনিটে বল নিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়ার সময় ডি মারিয়াকে বাঁধা দেন থিও হার্নান্দেজ। ডি মারিয়া পড়ে গেলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। পঞ্চম বিশ্বকাপে এটি মেসির ১২তম গোল। এই গোলে তিনি পেলেকে ছুঁয়ে ফেললেন।


এদিন আর্জেন্টিনার আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারছিল না ফ্রান্স। ৩৬ মিনিটে ফ্রান্সের রক্ষণভাগ থেকে বল পেয়ে কাউন্টার অ্যাটকে ওঠে আর্জেন্টিনা। বল নিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়া মেসি পাস দেন ডি মারিয়াকে। বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ফিনিশিং দেন ডি মারিয়া।


দ্বিতীয়ার্ধেও দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা। তবে এই অর্ধে কিছুটা ছন্দ খুঁজে পায় ফ্রান্সও। তবে বলার মতো কোনো আক্রমণ করতে পারেনি  তারা।


৪৯ মিনিটে ডি বক্সের ডানপপ্রান্ত থেকে ডি পলকে ক্রস দেন মেসি। ডি পলের দুর্দান্ত ভলি অবশ্য সহজেই লুফে নেন লরিস। ৫১ মিনিটে কর্নার পায় ফ্রান্স। কর্নার থেকে আসা বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন মার্টিনেজ।



৫৮ মিনিটে আলভারেজের শট ঠেকিয়ে দেন লরিস। ৬০ মিনিটে  ম্যাজিক দেখান ডি মারিয়া। ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে পড়েন বক্সে। পাস বাড়ান মেসিকে। ৩ জন ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে নেওয়া মেসির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬২ মিনিটে মেসি-ম্যাক অ্যালিস্টার দারুণ বোঝাপড়ায় ফ্রান্সের বিপদসীমায় ঢুকে পড়ে। অবশ্য মেসির বাড়ানো বলে পা লাগাতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার।


এ সময় বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে দুদল। ডি মারিয়ার বদলে নামেন আকুনিয়া। দেশম গ্রিজম্যান ও থিও হার্নান্দেজকে তুলে ক্যোমান ও কামাভিঙ্গাকে নামান। এরপর বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট।


৮০ মিনিটে কোলো মুয়ানিকে ডিবক্সে ফেলে দেন ওতামেন্ডি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান এমবাপ্পে। এর এক মিনিট পর ফের এমবাপ্পে ম্যাজিক। বা প্রান্ত থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে কোনাকুনি শট নেন এমবাপ্পে। বল জালে জড়িয়ে পড়তেই উল্লাসে মেতে ওঠে ফরাসিরা। এই গোলে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোলের বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি। দুই  ফাইনাল মিলিয়ে ৩ গোল করলেন এমবাপ্পে। 


অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের খেলা শেষেও দুদল সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে। এরপর দলকে আরও একবার শিরোপা জয়ের স্বপ্নে মাতান মেসি। তার ১০৮ মিনিটের করা গোলে লিড পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু ১১৬ মিনিটে বল প্রতিপক্ষের বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে মন্টিয়েলের হাত স্পর্শ করে বল। তাতে পেনাল্টি পেয়ে যায় ফ্রান্স। স্পটকিকে গোল করেন ১৯৬৬ সালের ফাইনালে ইংল্যান্ডের হয়ে জিওফ হার্স্টের পর হ্যাটট্রিকে ভাগ বসান এমবাপ্পে। সঙ্গে ৮ গোল করে তিনি বনে যান আসরের সর্বোচ্চ স্কোরার।




Post Top Ad

Responsive Ads Here