রাজশাহীতে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধভাবে তৈরী হচ্ছে ইট |
ওবায়দুল ইাসলাম রবি, রাজশাহী:
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার হাইকোর্টর নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে মোহনপুরে অবৈধ প্রন্থায় প্রস্তুত করা হচ্ছে ইট।
একইভাবে গাছের খড়ি জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় ইটভাটা। দেশের সকল অবৈধ ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিলেও তোয়াক্কা করছেন না ইট ভাটার মালিকরা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইটভাটার চারিদিকে ফলজ, আলু চাষসহ নানা রকম সবজির চাষ শুরু করেছে সাধারণ কৃষকরা।
মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের ঝালপুকুর গ্রামের নিকটবর্তী স্থানে কৃষি জমির উপর অবস্থিত আজিজুল হকসহ কয়েকজন সুবিধাভোগী ব্যক্তির অবৈধ ইটভাটা। কৃষি জমির ফসলের মাঝখানে অবৈধ প্রন্থায় মাটি সংগ্রহ কওে তৈরী হচ্ছে নিম্ন মানের ইট। আর এ ইট পুড়াতে আশপাশ হতে নানান কৌশলে গাছ কেটে সংগ্রহ করা হচ্ছে গুলসহ অসংখ্য ডালপালা। কাঠের ব্যবহারে পরিবেশ নষ্ট করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ঝালপুকুর আদিবাসি পাড়া, চক-বেলনা, বেলনা, ভড়ভড়াইল, আত্রাই, পারিলাডাঙ্গা গ্রাম সহ অসংখ্য গ্রামের জনসাধারণ।
ভাটার সন্নিকটে অবস্থিন বেলনা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট এবং আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কেশরহাট থেকে কামারগাঁ রোডের যাতায়াত করা যাত্রী ও পথচারীরা। এই ইটভাটার কোন নিদিষ্ট নাম খোঁজে না পাওয়া গেলেও বানানো ইটে এএমএসএস ইংরেজি অক্ষরের লিখা দেখা গেছে। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এসব ইটভাটা চলা নিয়ে ইটভাটা মালিক আজিজুল হক বলেন, ডাম চিন্নির ভাটার কোন অনুমোদন সরকারি ভাবে পাওয়া যায় না। অনেক আগে প্রশাসন আমাদের ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে, এবার এখনো প্রশাসন কিছু বলেনি। শুধু আমাদের ভাটায় কাঠ পুড়ানো হয় না বরং অনেক ভাটায় কাঠ-খড়ি পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন, ভাটাটির আকার এমন হওয়ায় আমরা হতবাক। টিন আর ডামের সিট ব্যবহার করে সামান্য কয়েক ফুট উচু দিয়ে ইটভাটার ধোয়া ছড়ানোর কারনে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এমন অনবিরত ধোয়ার কারনে আমদের শরীরে অচিরেই ফুসফুসের সমস্যায় শ্বাসকষ্ট, লিভার অকেজ, কাশি, টিবি ও কিডনির রোগ এবং ক্যনসারসহ নানান মরনব্যধি রোগে হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক।
ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে আমার চেয়ে উপরের দ্বায়িত্ব সম্পূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন। সুতরাং আমি এবিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেন সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী বলেন, সরকারী নিদের্শনা মেনে যদি কেউ ইটভাটা চালায় তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। ইটভাটা চালানোর আইনগত ভিত্তি আছে বলে আমি মনে করি না। সরকারের নির্দেশ না মেনে কীভাবে এ ধরণেন ইটভাটা চলছে আমি বলতে পারব না। তবে ঝুকিপুর্ণ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ চাই।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, তার যোগদানের পরে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। খুব শিগ্রই অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালু রয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান, রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মোঃ কবির হোসেন।