ফরিদপুরে হামলার শঙ্কায় থানায় জিডির পরেই হামলা, জামিনে এসেই হুমকি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ০৫, ২০২৩

ফরিদপুরে হামলার শঙ্কায় থানায় জিডির পরেই হামলা, জামিনে এসেই হুমকি

 


তহিদুল ইসলাম : 

‘আমরা গরিব মানুষ কি বিচার পাবো না? এদেশে কি আমার মতো গরিব মানুষের কোনো মূল্য নেই? আমাকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে উল্টা আসামীরা আমাকে জড়িয়ে মামলা করেছে। এখনও আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আসামীদের ভয়ে বাড়িতে যেতে পারতেছি না।’

হাসপাতালের বেডে বসে কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কোরকদি ইউনিয়নের বামুন্দি-বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. ইয়াসিন মোল্লা ওরফে সবুর মোল্লা (৫০)। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার শঙ্কায় থানায় সাধারন ডায়েরী করার পরে ভাতিজাদের হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ ঘটনায় একটি ২৯ ডিসেম্বর একটি মামলা হলেও আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসে। অথচ, এখনও আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি। বর্তমানে জামিনে এসে তারা বলতেছে, পুলিশ কিছুই করতে পারবে না, থানা ও কোর্ট ডিসমিস করে দিয়েছি, এখন তোরে খাবো, মেরে গুম করে দিবো। এছাড়া আমার পরিবারের লোকজনকে ভয়ভীতি ও গালিগালাজ করে যাচ্ছে। 

জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর বামুন্দি-বালিয়াকান্দি গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মো. ইয়াসিন মোল্লার উপর হামলা করে তার চাচাতো ভাই মৃত সরোয়ার মোল্লার ছেলে হাসান মোল্লা, হোসেন মোল্লা, মফিজুর মোল্লা ও শরীফুল মোল্লা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইয়াসিন মোল্লা মাথায় আঘাত করে। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর তিনি হামলার শঙ্কায় মধুখালী থানায় নিরাপত্তার জন্য সাধারন ডায়েরী করেন। 

হাসপাতালের বেডে বসে আহত ইয়াসিন মোল্লা আরো বলেন, আমি ছোট থাকতে বাবা মারা যায়। এরপর আমাদের জমিজমা হাসান মোল্লার বাবা সরোয়ার মোল্লা দেখাশুনা করতো। কিন্তু সরোয়ার মোল্লা মারা যাওয়ার আগে আমাদের জমিজমা বুঝিয়ে দেননি। বর্তমানে তার ছেলেরা ঐ জমি ভোগদখল করে রেখেছে। আমি জমিজমার কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং দেখাতে অস্বীকার করে। এছাড়া আমি নিরীহ মানুষ হওয়ায় বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখায়। এরই জেরে নিরাপত্তার জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর মধুখালী থানায় সাধারন ডায়েরি করি। এরপরের দিন ভাতিজারা আমার জায়গা থেকে জোড়পূর্বক একটি গাছ কাটতে থাকে। আমি বাঁধা দিলে তখন আমার উপর ভাতিজারাসহ ১০-১২ জন ধারালো কুড়াল ও দা নিয়ে হামলা করে। এ সময় আমার মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপ দিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এ ঘটনার পর আহত অবস্থায় মধুখালী থানায় গেলে ডিউটি অফিসার বলে আপনি হাসপাতালে যান, বিষয়টি দেখাবানে। কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ নিলেন না।

এ বিষয়ে মফিজুর মোল্লা সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের একটা পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা হতেই পারে। দুইজনের জমির সীমানা থেকে গাছটি কাটা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হলেও বর্তমানে আমরা জামিনে রয়েছি। এছাড়া আমার চাচা কখনো জমিজমার কথা বা আমাদের কাছে কাগজ দেখতে চাইনি। হঠাৎ করে লোকজন নিয়ে এসে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিলো। আমাদের সমাজে একটা মান-সম্মান আছে, হয়তো গরীবের মানসম্মান কম।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী এস আই আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি মারামারির মামলা হয়েছিলো। এতে ১২ জনকে আসামী করা হয়েছে। 

Post Top Ad

Responsive Ads Here