![]() |
হাইকোর্টের নির্দেশে ধর্ষণ মামলার আসামী কাঠালিয়ার দুই চেয়ারম্যানের আত্মসমার্পন, জামিন লাভ |
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মিতু আক্তার দোলা ধর্ষণের মামলায় ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ এমদাদুল হক মনির ও সহযোগী আওরাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু সিকদার জামিন লাভ করেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বুধ বার (৪জানুয়ারী) বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেনের আদালতে আত্মসমার্পন করে এ জামিনাবেদন করেন বলে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো. হুমায়ন কবির জানান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মনির ও তার সহযোগী আওরাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু সিকদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করে একই উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নের এক তরুণী।
মামলার বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রথমে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানা ও পরে বরিশাল পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পিবিআই’র তদন্ত রিপোর্টের উপর নির্ভর করে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয়।
সর্বশেষ নির্যতিতা তরুনী নিরপেক্ষ তদন্ত ও নিন্ম আদালতে ন্যায় বিচার বাধাগ্রস্থ করার অভিযোগে উক্ত খারিজাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের (ফৌ.মিস কেস নং-৪৫৭৯৭/২২) আশ্রয় নেন। মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফামিনা কাদিরের যৌথবেঞ্চ মামলাটি পুনরায় তদন্ত ও আসামীদের আত্মসমার্পনের নির্দেশ দেয়।
মামলার বাদী ঐ তরুনী জানায়, এমদাদুল হক মনির কাঠালিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকার সময় একই গ্রামের ওই তরুণীর সঙ্গে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে চাকুরী ও বিয়ের প্রভোলন মনির দেখিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তারা ২০১৭ সালের ৩এপ্রিল থেকে গত ১আগস্ট পর্যন্ত বরিশাল ও কাঠালিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষন করে।
তবে তরুনী বিয়ের জন্য চাপ দিলে মনির ও তার সহযোগী মিঠু সিকদার একজন ভ‚য়া হুজুর এনে একটি সাদা কাগজে ওই তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে বলেন, তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। সামাজিক স্বীকৃতির দাবী করলে উপজেলা নির্বাচনের পর বিষয়টি সুরাহা করবে আশ্বাস দিয়ে কাগজপত্র তার কাছে রেখে দেয়।
এরপর ২০১৯ সালে মনির উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ঐ তরুনী ও তার পরিবার বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে মনির টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে বরিশালে ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট বরিশাল নগরীর এক আইনজীবীর চেম্বারে শালিশ বৈঠক হলে উপজেলা চেয়ারম্যান বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে কোন সুরাহা না হওয়ায় নির্যাতিতা তরুনী উপজেলা চেয়ারম্যানের ও তার সহযোগী ২জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এদিকে প্রভাবশালী ঐ উপজেলা চেয়ারম্যান লালসার শিকার হয়ে টানা ৩ বছর ধরে তরুণীকে পরিবারসহ এলাকা ছাড়া হয়ে থাকতে হচ্ছে। ফলে বর্তমানে ঐ তরুণী পরিবার সহ মানবেতর জীবন জাপন করছে। ধর্ষক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করায় নিজের বাড়িঘর ছেড়ে আরেক জেলায় গিয়েও নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছেন নির্যাতিতা তরুনী ও পরিবার।
তবে উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মনির সাংবাদিকদের কাছে মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক বলে দাবী করে আসছেন।