কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী লাল্টু বাহিনীর হামলা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, জানুয়ারী ০২, ২০২৩

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী লাল্টু বাহিনীর হামলা

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী লাল্টু বাহিনীর হামলা
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী লাল্টু বাহিনীর হামলা


মোঃ হাবিবুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও দৈনিক আজকালের খবর এবং উধরষু চৎবংবহঃরসবং কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি মোঃ হাবিবুর রহমান। 


রবিবার (১ জানুয়ারি ২০২৩) আনুমানিক ১ঃ৩০ ঘটিকায় কুষ্টিয়া বারখাদা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মোড়ে এই হামলার শিকার হন হাবিবুর রহমান। হামলায় গুরুত্বর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন সহকারীরা ।

 

এ ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা করে রবিবার সন্ধায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেছেন হামলার শিকার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান। 


এজাহার সূত্রে জানা যায়, এজাহারের ১নং আসামী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জুগিয়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিম লাল্টু (৪০) ও ২নং আসামী বড় বাজার এলাকার মোকারম হোসেন মোয়াজ্জেম এর ছেলে শিপন হোসেন (৩৫) এর সাথে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ মনোনয়ন উত্তোলনের দিন থেকেই হামলার শিকার হাবিবুর রহমান এর সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই প্রেক্ষিতে রোববার দুপুর দেড় টার সময় মনোনয়ন ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অফিসের মোড়ে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা উল্লেখিত আসামীগণ হাতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র সহকারে বেআইনী ভাবে পথ রোধ করে। এসময় তারা সাংবাদিক হাবিবুর রহমানকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা হাবিবুরকে বলে, তুই মনোনয়ন ফর্ম জমা দিতে পারবিনা। আজ পর্যন্ত কাউকে জমা দিতে দিনাই আর তুইও পারবিনা । তখন হাবিবুর রহমান তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করা মাত্রই লাল্টু-শিপন সহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। 


জানা যায়, আব্দর রহিম লাল্টু ও হাবিবুর রহমান দুজনেই কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৫নং পরিচালক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কুষ্টিয়া বারখাদা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২০২২- ২০২৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রয়ারি মাসের ৮ তারিখে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ১ জানুয়ারি ২০২৩ । হাবিবুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল না করলে আব্দুর রহিম লাল্টু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতেন।


আহত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান জানান, কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাচন এর তফসিল ঘোষণার পর আমি ২৮ শে ডিসেম্বর ২০২২ ইং বারখাদা সদর দপ্তরে দুপুর ২ টার দিকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করতে গেলে প্রথমে আমাকে ২ জন কাউন্টার থেকে আমাকে অনুরোধ করে তাদের কথা শোনার জন্য কিন্তু আমি বলি আগে টাকা জমা দিই তারপর যা বলেন শুনছি , অনেক কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমি জোর করে ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা করি । তারপর তারা ৫/৬ জন অফিসের বাহিরে চলে যাই । অফিসের সকল পক্রিয়া শেষ করে মনোনয়ন ফর্ম সহ  ভোটারলিষ্ট আমার হাতে তুলে দেই নির্বাচন অফিসার এমএস জসিম সাহেব।এরপর আমি অফিস থেকে বের হতেই মেইন গেটের রাস্তায় ২ মোটর সাইকেলসহ সিপন আমার সামনে এসেই আমাকে চা খাওয়ার জন্য দোকানে বসে আলোচনার প্রস্তাব দেই । আমি কোন ভাবে রাজি না হলে সিপন বলে ঠিক আছে আপনি বাড়ী যান কিভাবে যাবেন। তাদের কারনে আমি আবার অফিসে ঢুকে চিন্তা করে করে সিদ্ধান্তে যাই আল্লাহ ভরসা । পরে দেখলাম লাল্টু ও সিপন সহ ১০/১২ জন ৪/৫ টা মোটরসাইকেল নিয়ে মোড়ের দিকে মোহড়া করছে । এই ঘটনার অনেক কিছু অফিসের সিসি ক্যামেরায় বন্দী । অবশেষে প্রায় ২ ঘন্টা পর আমি অফিস থেকে বের হয়ে  মোড় ঘুরতেই দেখি ওরা সবাই দাড়িয়ে আছে । আমি সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলে ফুল শক্তি দিয়ে জীবন বাজী রেখে পিছনে ২ মোটরসাইকেলের হাত হাত থেকে বেঁচে  আল্লাহর ইচ্ছায়  বাড়ীতে আসি । আর এই ঘটনা আমি সবাইকে বলার আগে ওরা সব জায়গাতে জানায় হাবিব মনোনয়ন তুলতে এসে মোটরসাইকেল্ পালিয়ে জীবন বাঁচায় । পরে আমি ভেবে চিন্তে ৩১শে ডিসেম্বর শনিবার দুপুর ৩ টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানা জিডি করতে গেলে আবারও শিপন আমাকে দেখে বলে আমি আজ ২দিন থানায় নজর রাখছি আপনি আসলেই বুঝাপড়া হবে ।সিপন আমাকে বারবার থানার বাহিরে যেয়ে আলোচনার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে নির্বাচন থেকে সরে যেতে আর তা না চরমমুল্য দিতে হবে । আমি বলি ভাই আপনি আমার সাথে যা করছেন তারপরে আর কোন আলোচনা থাকতে পারে না ।আমি কৌশলে থানার বারান্দায় ওঠে যাই এবং সিপন ও আমার সাথে জোর করে কথা বলতে চাইলে আমি ডিউটি অফিসারদের  বলি এবং তারা তাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে আমাকে বলে আপনি বসে থাকেন ওসি স্যার আসা পর্যন্ত । পরে আমি দেখি ওরা ফোন দিয়ে লোক জড়ো করছে ২০/২৫ জন । আমি আমার বন্ধু নজরুল ইসলাম প্রধানকে ফোন করে বিস্তারিত জানায় , পরে সে আসলে একই কথা বসে আপোস করার জন্য তা না হলে সমস্যা । আমার সাথে সকল খাবাপ ঘঠনা সিসি ক্যামেরা দেখলেই প্রমানিত। ঘন্টা দুয়েকপর ওসি সাহেব আসলেন এবং উভয়ের কথা শুনে পরে আমাকে বললেন আপনি চাইলে জিডি করতে পারেন । পরে বাহিরে এসে জিডি না করে বন্ধু নজরুল ও জনির সহযোগিতায় থানা থেকে বের হয়ে বটতৈল আমার বাড়ীতে আসি ।২৮শে ডিসেম্বর এর পর থেকেই আমাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আব্দুর রহিম লাল্টু। তিনি নিজেকে কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহিদুল ইসলামের ভাইয়ের ছেলে পরিচয় দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে নিষেধ করেন। মনোনয়নপত্র জমা দিলে হত্যার হুমকি দেয়। ১লা জানুয়ারী ২০২৩ইং রবিবার আনুমানিক দুপুর দেড়টায়  আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লাল্টু, শিপনসহ ১০/১২ জনের একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার উপর অতর্কিত  হামলা চালায়। আমি সেখানে অচেতন হয়ে পড়লে তারা আমাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর জ্ঞান ফিরে আমি দেখি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে। তিনি আরও বলেন, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, সিনিয়র সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধুর পরিক্ষীত সৈনিক । আমি নিজেও ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে এসেছি। সর্বশেষ ২০১৬ -২০২১ সাল পর্যন্ত  সিশেল আওয়ামীলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িক্ত পালন করেছি। আমার উপর এই ন্যক্কারজনক হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।


আব্দুর রহিম লাল্টু ও শিপন হোসেন মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  দেলোয়ার হোসেন বলেন, হামলার শিকার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান একটি অভিযোগ ১লা জানুয়ারি রাতে জমা দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হামলাকারী যেই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।




Post Top Ad

Responsive Ads Here