ধানসিঁড়ির তীরে সরিষা ফুলের সমারোহ |
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীর তীরের বিভিন্ন স্থানের বেড়িবাঁধ ও জেলার ৪ উপজেলায় মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে রঞ্জিত হয়েছে। তীর ও মাঠজুড়ে শুধু হলুদ ফুল। সদর উপজেলার সাচিলাপুর গ্রামে ধানসিড়ি নদীর তীরের বেরিবাঁধ ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় বারি ১৪, বারি ১৬, বারি ১৭, বিনা ৪ ও বিনা ৯ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। ঝালকাঠি জেলায় এবছর ৮শ ৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত ৫ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ সরিষার চাষাবাদ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঝালকাঠিতে সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক ফুটেছে। এবার সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে প্রত্যেকটি সরিষা ক্ষেত। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা মাঠ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা কৃষকদের ও কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলার চারটি উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের প্রাপ্ত তথ্যের বরাদ দিয়ে নিশ্চিত করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম।
জেলা সদরে সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে নদীর তীর ও মাঠঘাট। দুরন্ত শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটোছুটি করছে। মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সরিষার ফুলের চারপাশে মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে গেছে।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউপির ধানসিঁড়ি তীরের চাষী সাচিলাপুর গ্রামের কৃষক তৈয়ব আলী বলেন, এবার এক একর জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বেশ ভালো ফুল ধরেছে। আশা করা যায় ফলন ভালো হবে।’
নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের কৃষক আরমান মিয়া বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে সরিষার চাষ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আশা করছি ফলন ভালো হবে। সরিষায় ধানের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও আবাদ করেছি।’
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ঝালকাঠিতে এ বছর চার উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ৫টি জাতের সরিষার ভালো মানের বীজ ও সার কৃষকের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। সাধারণত মাঘ ও ফাল্গুন মাসে কৃষকেরা ঘরে সরিষা তুলতে পারবেন।