আজ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩

আজ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস

আজ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস
আজ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি:

চলছে বাঙ্গালী জাতির বিজয়ের মাস। এই মাসটির সাথে জড়িয়ে আছে অনেক স্মৃতি। স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর। আজ ১২ ডিসেম্বর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। বাঁকী আর মাত্র ৪ দিন। তাই পুরো মাসটি বাঙ্গালীদের বিজয়ের মাস। 


মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমনে ক্ষত বিক্ষত পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ায় দেশ স্বাধীনের মাত্র ৪ দিন আগে ১৯৭১ সালে এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই আদমদীঘিকে শক্তু মুক্ত করেন। আদমদীঘি হয় হানাদার মুক্ত। আদমদীঘি উপজেলা ছিল পাক হানাদারের শক্ত ঘাঁটি। পাক সেনা, মিলিটারি বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিত ভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রাম থেকে গ্রামান্তর অগ্নিসংযোগ, লুটপাট সহ নির্বিচার হত্যাকান্ড চালিয়েছে। 


মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই কমান্ডার ফললুল হক, এল কে আবুল, মুনছুর রহমান, আজিজার রহমান, নান্টু, নজরুল ইসলাম, সেনা সদস্য আমজাদ হোসেন, আব্দুল হাকিম সহ অন্যান্যরা মুক্তি যোদ্ধাদের নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় খন্ড খন্ড যুদ্ধ চালান। গেরিলা হামলায় পাক সেনা ও রাজাকারাও তাটাস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে থানায় আক্রমন করে বেশ কিছূ সংখ্যক গোলা বারুদ করাত্ব করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পাক হানাদারের সাথে কুসুম্বী, রেল ষ্ট্রেশন সহ কয়েকটি গুরুত্ব পূর্ণ স্থানে দফায় দফায় সম্মূখ যুদ্ধ ও বাঁধে। এতে বেশ কিছূ সেনা নিহত হয়। ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিরাপদ স্থান। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমন শেষে ঐ বিল পেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেত। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে ক্ষিপ্ত হয়ে পাক বাহিনীরা খুজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, আলতাফ হোসেন বিশ্রাম নেয়ার সময় ছোট আখিড়া গ্রামের নিকট থেকে জসিম উদ্দীন নামের এক দালাল খবর দিয়ে ধরে দেয় পাক হানাদারের হাতে। এদের উপর নির্মম ভাবে নির্যাতন করা কালে চাঁপাপুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক টুলু ও আব্দুল ছাত্তার কে ধরে নিয়ে আসা হয় থানায়। হানাদার বাহিনী এই চার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করে চালানো হয় প্রকাশ্যে নির্মন নির্যাতন। এর পর দেশ স্বাধীনের ৬ দিন পূর্বে আদমদীঘি মহাশ্বশ্মান ঘাটিতে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই মহাশ্বশ্মান ঘাটিতে অবস্থিত বদ্ধ ভূমিটি আজও সংস্কার কিংবা উন্নয়ন হয়নি। 


মুক্তিযোদ্ধাদের চারিদিকের আক্রমনে ৫ ডিসেম্বর ভোর হতে আদমদীঘি সদর থেকে পাক হানাদাররা রেল লাইনের পাশ দিয়ে হেটে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পাক হানাদাররা পালিয়ে যাওয়ার সময় পাইকপাড়া গ্রামের নিকট মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার কে হত্যা ও কায়েত পাড়ার নিকট মুক্তিযোদ্ধা একরাম কে বেয়োনেটের খোচায় গুরুত্বর জখম করে। অবশেষে কোন প্রকার সংঘাত ছাড়াই বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আদমদীঘি কে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করেন। এক পর্যায়ে সান্তাহার রেল জংশন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত কড়া পাহারা বসিয়ে কারফিউ জারি করে সাধারনের চলাচল নিয়ন্ত্রন করে। এ উপজেলায় ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে।




Post Top Ad

Responsive Ads Here