ট্রেনে কাটা পড়া বৃদ্ধার ছটফট দেখলো পুলিশ, ৩০ মিনিট পর মারা গেল |
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে ৬০ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে এক প্লাটফর্ম থেকে আরেক প্লাটফর্মে পার হতে গিয়ে ওই বৃদ্ধা কাটা পড়ে।
এরপর বাঁচার জন্য ছটফট করলেও পুলিশ সাহায্যের জন্য দায়িত্ব পালন করেনি। পাশাপাশি স্থানীয় কিছু লোকজনও সেখানে উপস্থিত ছিলো। বাঁচানোর জন্য নেওয়া হয়নি কোনো হাসপাতালে। প্রায় ত্রিশ মিনিট পর সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের দায়িত্ব ও অবহেলা নিয়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দিলে তারা এসে তাকে মৃত দেখতে পায়।
জানা যায়, সোমবার সান্তাহার জংশন স্টেশনের ৪নং প্লাটফর্মে বোনারপাড়া অভিমুখী কমিউটার লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। আর ওই বৃদ্ধা দাঁড়িয়ে ছিলো ৫ নং প্লাটফর্মে। হঠাৎ তিনি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের নিচ দিয়ে ৪ নং প্লাটফর্মের দিকে আসার চেষ্টা করেন। এমন সময় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি বোনারপাড়া অভিমুখী ছেড়ে দেয়। কিন্তু বৃদ্ধা প্লাটফর্মে আর উঠতে পারে না। ফলে ওই ট্রেনে কাটা পড়ে সে। কাটা পড়লেও বৃদ্ধা বাঁচার জন্য ছটফট করছিল। আর দাঁড়িয়ে থেকে ছটফটের সেই দৃশ্য দেখছিল প্লাটফর্মে ডিউটিরত পুলিশ ও উৎচ্ছুক জনতা। প্রায় ৩০ মিনিট পর মারা যায় বৃদ্ধাটি।
ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে উদ্ধারের জন্য খবর দিলে তারা এসে মৃত দেখতে পায়। ইতিমধ্যে বেঁচে থাকার একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। আর এই কারণে শুরু হয়েছে পুলিশের দায়িত্বের ভূমিকা নিয়ে জল্পনা কল্পনা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, দূর্ঘটনার পরও ওই বৃদ্ধা প্রায় ৩০ মিনিটের বেশি বেঁচে ছিল। তিনি বাঁচার জন্য ছটফট করছিল। সেখানে পুলিশসহ অনেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। অবশেষে মারা গেল বৃদ্ধা।
জানতে চাইলে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তার হোসেন জানান, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ৩০মিনিট হবেনা। পুলিশ যাওয়ার সাত থেকে আট মিনিটের মধ্যে সে মারা যায়। সেখানে শতশত মানুষ ছিলো কেউ এগিয়ে আসেনি। অথচ শুধুমাত্র পুলিশের মানবিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। দায়িত্ব কি পুলিশের একার, প্রশ্ন করেন তিনি? তারপরও আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। যেহেতু তার একটি পা ও একটি হাত কেটে গেছে, তাই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।