![]() |
নাশকতাকারী গ্রেপ্তারের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত |
সান্তাহার রেলওয়ে থানার একের পর এক কর্মকান্ড নিয়ে জনমনে প্রশ্ন
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন নাশকতাকারীর সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক শফিক ছোটনকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। শুক্রবার ২২ ডিসেম্বর সকালে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে থানায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে তাকে লাঞ্চিত করা হয়।
লুঙ্গি ও গেঞ্জি পড়া নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ কনষ্টেবল পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক শফিক ছোটনকে অকথ্য ভাষায় গালিগাজায় করে তার হাত থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। সাংবাদিক শফিক ছোট নওগাঁ জেলার ষ্টাফ রির্পোটার ও নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। এঘটনার পর সাংবাদিকমহলসহ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের ঝড় বইছে। এদিকে সান্তাহার রেলওয়ে থানার একের পর এক ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি ষ্টেশনে আন্তঃনগর দ্রæতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর কিছুদিন পর গত ১৫ ডিসেম্বর জয়পুরহাট রেলওয়ে ষ্টেশনে উত্তরা মেইল ট্রেনে আবারও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় নাশকতাকারীরা। এই দুটি ঘটনায় সান্তাহার রেলওয়ে থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার রাতভর জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাশকতার সাথে জড়িত থাকার দায়ে জেলার নিশির মোড় এলাকার বনোমালিপাড়ার মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে তাইজুল ইসলাম (২৬), একই এলাকার মো. ওয়াদুদের ছেলে মো. অপু (২১) ও আক্কেলপুর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মো. রাজুর ছেলে আব্দুল মমিন (২১) গ্রেপ্তার করে। নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারের খবর জানতে পেরে সাংবাদিক শফিক ছোটন তথ্য সংগ্রহ করতে আসে থানায়। এরপর তথ্য না দিয়ে উল্টো লাঞ্চিত করা হয়েছে কর্তব্যরত সাংবাদিককে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ জানালে জিআরপি থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য আমি দু:খিত। এ ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই পুলিশ কনষ্টেবল নুরুল ইসলামকে পাকশী পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যন্যাদের তদন্ত সাপেক্ষে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত তিন জনকে শুক্রবার দুপুরে বগুড়া আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা জিআরপি থানার সামনে মৌন প্রতিবাদ কর্মসুচি পালন করে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন, দেশে বর্তমান একটি নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সারাদেশে নাশকতামুলক নানা অপতৎরতা অব্যাহত রয়েছে। এ সব অপতৎরতা প্রতিরোধে যখন সাংবাদিক ও পুলিশ এক হয়ে কাজ করছে, ঠিক সেই মুহুর্তে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা তথ্য প্রদানে নানা তালবাহান সৃষ্টি করার অর্থ কি? তাহলে কি আমরা ধরে নিবো রেলওয়ে নাশকতা পিছনে রেলওয়ে পুলিশের হাত রয়েছে। এছাড়া এই রেলওয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিভিন্ন ঘটনা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংবাদিকমহলসহ স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে লাঞ্চিত হওয়া সাংবাদিক শফিক ছোটন বলেন, সকালে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পর ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে রেলওয়ে থানায় যাই। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কনষ্টবল ফেরদৌস গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমাকে তথ্য প্রদান করে। পরে থানা ফটকের ছবি নেওয়ার সময় লুঙ্গি ও গেঞ্জি পড়া কনষ্টেবল নুরুল ইসলাম এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তার আরও দুই সহকর্মীসহ তারা আমাকে অর্কথ্যভাষায় গালিগালাজ করে এবং মুঠোফোন কেড়ে নেয় । এ ঘটনায় সুষ্টু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবী জানায়।